মিড ডে মিলে নুন ভাত, লকেটের আচমকা হানায় সাসপেন্ড দুই শিক্ষিকা

  • হুগলির চুঁচুড়ার একটি স্কুলের ঘটনা
  • মিড ডে মিল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ
  • ছাত্রীদের দেওয়া হতো শুধু সেদ্ধ ভাত
  • আচমকা স্কুলে হানা দেন হুগলির সাংসদ
     

debamoy ghosh | Published : Aug 19, 2019 5:54 PM IST

স্কুলের মিড ডে মিলের হিসেব বলছে পাঁচ হাজার ডিম কেনা হয়েছে ছাত্রীদের খাওয়ানোর জন্য। অথচ প্রতিদিনই তাদের পাতে পড়ছে সেদ্ধ ভাত আর নুন। মিড ডে মিল নিয়ে এমন দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে  আচমকা হুগলির একটি স্কুলে হানা দিলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। সাংসদ যখন হাজির হয়েছেন, তখনও ছাত্রীদের পাতে সাদা ভাত। এই ঘটনার জেরে সাসপেন্ড করা হয়েছে স্কুলের প্রাক্তন এবং বর্তমান টিচার ইন চার্জকে। গোটা ঘটনার পিছনের তৃণমূলের দুর্নীতিকে দায়ী করেছেন হুগলির বিজেপি সাংসদ। 

এ দিন দুপপুরে এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় চুঁচুড়ার বালিকা বাণী মন্দির স্কুলে। অভিযোগ, প্রায় একমাস ধরে স্কুলের ছাত্রীদের মিড ডে মিলে হয় ফ্যানা ভাত নয়তো আলু সেদ্ধ ভাত খাওয়ানো হচ্ছিল। শুধু তাই নয়, স্কুলে মিড ডে মিল নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, মিড ডে মিলের হিসেবে দেখানো হয়েছে, পঁচিশ হাজার টাকার বিনিময়ে পাঁচ হাজার ডিম কেনা হয়েছে। মিড ডে মিলের জন্য আড়াইশো বস্তারও বেশি চালের হিসেব নেই। 

এই অভিযোগ পেয়ে এ দিন দুপুরে  ছাত্রীদের মিড ডে মিল দেওয়ার সময় আচমকা স্কুলে হাজির হন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। প্রথমে তিনি স্কুলের ভিতরে গিয়ে শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরে ছাত্রীদের খাওয়ার জায়গায় চলে যান। ঘটনাচক্রে এ দিনও ছাত্রীদের পাতে পড়েছিল সাদা ভাত। যা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন লকেট। 

বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, মিড ডে মিল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সত্যি কি না, তা খতিয়ে দেখতেই তিনি আচমকা হানা দিয়েছেন। লকেট বলেন, 'আগে থেকে খবর দিয়ে এলে হয়তো আজকে ছাত্রীদের মাংস ভাত খাওয়ানো হতো। তাই সত্যিটা দেখতে আমি আচমকা এসেছি। যাঁরা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, কাউকে রেয়াত করা হবে না।' লকেটের অভিযোগ, স্কুলের তৃণমূল প্রভাবিত পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে। 

যদিও স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা চুঁচুড়া পৌরপ্রধান গৌরিকান্ত মুখোপাধ্যায় পাল্টা অভিযোগ, চারজন শিক্ষিকার জন্য মিড ডে মিলের অচলাবস্থা হয়েছে। আগের টিচার ইন চার্জ বদলি হয়ে যাওয়ায় পরিচালন সমিতির ঠিক করে দেওয়া টিআইসিকে মিড ডে মিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত চারজন শিক্ষিকা মানছেন না। ফলে নতুন টিচার ইন চার্জের সই করার অধিকার না থাকায় টাকা থাকা সত্ত্বেও তা বরাদ্দ করা যাচ্ছে না। সেই কারণেই মিড ডে মিল দিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। গোটাটাই অন্তর্ঘাত বলে অভিযোগ করেন গৌরিকান্তবাবু। 

এই ঘটনায় স্কুলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কড়া পদক্ষেপ নেয় জেলা প্রশাসন। সাসপেন্ড করা হয় দুই শিক্ষিকাকে। প্রাক্তন টিচার ইন চার্জ শমিতা কুশারি এবং বর্তমান টিচার ইন চার্জ পূর্বা মুখোপাধ্যায়কে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানান হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। এর পাশাপাশি জেলার এক হাজার স্কুলে মিড ডে মিলের মান খতিয়ে দেখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। 
 

Share this article
click me!