আশিষ মণ্ডল, বীরভূম: খোদ জেলা সভাপতির বিরুদ্ধেই ক্ষোভ! দলের রাজ্যে নেতৃত্বের সামনে এবার গোষ্ঠীকোন্দলে জড়িয়ে পড়লেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। বীরভূমে বেকায়দায় গেরুয়াশিবির।
আরও পড়ুন: পাঁচিলকাণ্ডের পর ফের বিপত্তি বিশ্বভারতীতে, এবার নিশানায় ঐতিহ্যবাহী স্থান
শিয়রে বিধানসভা ভোটে, রাজ্যের সর্বত্রই সংগঠনকে আরও মজুবত করতে কোমর বেঁধে নেমেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বীরভূমের রামপুরহাট ১ নম্বর ও মহম্মদ বাজারে বুধবার স্থানীয় মণ্ডল সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করলেন জেলার সহকারী পর্যবেক্ষক বিবেক সোনকার। বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল-সহ আরও অনেকে। রামপুরহাট শহরের কামারপট্টি এলাকায় দলের কার্যালয়ে যখন ঢোকেন, তখন বিজেপি-এর সহকারী পর্যবেক্ষক বিবেক সোনকার ঘিরে ধরেন কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, হিটলারের মতো দল চালাচ্ছেন জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। পুরনো কর্মীদের কার্যত গুরুত্বহীন করে দিয়েছেন তিনি। যাঁদের সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁরা দলের প্রতি অনুগত নন! বিক্ষুদ্ধদের আলোচনায় বসার আশ্বাস দিয়ে কোনওমতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়।
এখানেই শেষ নয়। দুপুরে অন্য জায়গায় সভা করতে গিয়েও জেলা সভাপতি সম্পর্কে অভিযোগ শুনতে হয় বীরভূম জেলা দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি-এর সহকারী পর্যবেক্ষককে। বস্তুত, বিধানসভা ভোটের মুখে দলের অন্দরে যে ক্ষোভ বাড়ছে, সেকথা কার্যত স্বীকারও করেছেন তিনি। বলেছেন, 'বিজেপিতে কেউ সারাজীবন সভাপতি থাকে না। তিনবছর অন্তর পরিবর্তন হয়। ওরা আমার সঙ্গে বসতে চেয়েছিল। আলাদায় জায়গায় ওদের সঙ্গে বসেছি। আলোচনায় ওরা খুশি। দলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।'
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের কাণ্ডারি তিনি, নিজের গড়ে কোথায় আছেন শুভেন্দু অধিকারী
একসময়ে নলহাটি ২ নম্বর ব্লকে বিজেপি সভাপতি ছিলেন ঝলক মণ্ডল। তিনি বলেন, 'জেলা সভাপতি এক সঙ্গে ৩৩ জন মণ্ডল সভাপতিকে সরিয়ে দিয়ে নিজের পছন্দের লোকদের বসিয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশ সভাপতি কর্মীদের সঙ্গে কোন যোগাযোগ রাখে না। ফেসবুকে দলের বিরুদ্ধে কথা বলে। কর্মীদের মারার হুমকি দেয়। আমাদের দাবি নির্বাচনের ভিত্তিতে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন করা হোক।' নলহাটিরই আর এক বিজেপি নেতা অনিল সিং-এর অভিযোগ, 'জেলা কমিটিতে থাকলেও আমাকে কোনও মিটিং করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী, কোনও সভা-সমিতিতে ডাকাও হচ্ছে। সংগঠনকে মজবুত করতে হলে সংকীর্ণতা ত্যাগ করতে হবে।'
কী বলছেন বিজেপি বীরভূম জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল? তাঁর সাফাই, 'আমরা ওদের সঙ্গে বসেছিলাম। বলেছিলাম তোমাদের আরও গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব দিয়ে নিয়ে আসব। কিন্তু তারা কথা শুনতে চাইছে না। বিজেপি একটি সাংগঠনিক দল। নিজের ইচ্ছে মতো সব কিছু হয় না।'