জেতা আসনে দলের ভরাডুবি। উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে খড়গপুরের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। আর জেলা কার্যালয়ে বসে মাংস-ভাত খাচ্ছেন দলের নেতারা! তাঁদের উপর চড়াও হলেন বিজেপি কর্মীদেরই একাংশ। চলল ভাঙচুর, এমনকী মারধরও। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায়।
গত বিধানসভা ভোটে খড়গপুরে পদ্ম ফুটিয়েছিলেন খোদ বিজেপি-এর রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। হেরে গিয়েছিলেন টানা পাঁচবারের বিধায়ক জ্ঞান সিং সোহনপাল। যাঁকে চাচা নামেই চিনত সকলে। এমনকী, লোকসভা ভোটে যখন মেদিনীপুর থেকে প্রার্থী হন দিলীপ, তখনও খড়গপুর সদর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে লিড পেয়েছিলেন তিনি। গেরুয়াশিবিরের অন্দরের খবর, লোকসভা ভোটে জয়ের পর বিজেপিতে যোগ দেন অনেকেই। তাঁদের আক্রমণে মুখে পড়তে হয়। কারও কারও বিরুদ্ধে আবার মিথ্যা মামলাও হয়। তখন সেসব নিয়ে দলের নেতারা মাথা ঘামাননি বলে অভিযোগ। কিন্তু উপনির্বাচনে খড়গপুরে কেন্দ্রে বিজেপি হারের পরই পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এখন নিচুতলার কর্মীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন বলে জানা গিয়েছে।
শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেবরায় বিজেপি-এর জেলা পার্টি অফিসে খাওয়া-দাওয়ার এলাহি আয়োজন করা হয়। পার্টি অফিসে হাজির ছিলেন ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য- সহ দলে কয়েকজন নেতা। তখন মাংস রান্না চলছিল। আচমকাই দলের জেলা কার্যালয়ে হাজির হন বিজেপির কয়েকজন পুরনো কর্মী। উপনির্বাচনে হারের পরেও পার্টি অফিসে বসে নেতাদের খাওয়া-দাওয়া করতে দেখে আর মেজাজ ঠিক রাখতে পারেননি তাঁরা। রীতিমতো ভাঙচুর শুরু হয়ে যায় পার্টি অফিসে। নেতাদের কার্যালয়ের বাইরে এনে বেধড়ক মারধর করেন বিজেপি কর্মীদেরই একাংশ! ফেলে দেওয়া হয় রান্না করা খাবারও। এমনকী, জেলা সভাপতির গাড়িটিকেও আস্ত রাখেননি তাঁরা। তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। শেষপর্যন্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কী বলছে বিজেপি-এর পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলার নেতৃত্ব? দলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতির অন্তরা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, পুরনো ক্ষোভের কারণে পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছেন বিজেপিরই একটি গোষ্ঠীর লোকেরা। এই ঘটনা অনভিপ্রেত। যাঁরা হামলা চালিয়েছেন, তাঁরা বিজেপি-এর ভালো চান না।