এই পুরসভার মূল ইস্যু নাগরিক পরিষেবার বেহাল দশাকে ঠিক করা। অতিমারির মধ্যে কোচবিহার পুরসভার কাজ নিয়ে সেভাবে খুশি নয় এই পুর এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়াও কোচবিহার শহরের আধুনিকতার ছোয়াটা লাগাটা প্রয়োজন বলেই মনে করেন এখান বাসিন্দারা।
এই পুরসভার মূল ইস্যু নাগরিক পরিষেবার বেহাল দশাকে ঠিক করা। অতিমারির মধ্যে কোচবিহার পুরসভার কাজ নিয়ে সেভাবে খুশি নয় এই পুর এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়াও কোচবিহার শহরের আধুনিকতার ছোয়াটা লাগাটা প্রয়োজন বলেই মনে করেন এখান বাসিন্দারা।
Main Body Copy-
বরাক উপত্যকায় কোচবিহার রাজ্যের ইতিহাস এক বিশাল ঐতিহ্যমণ্ডিত। একটা সময় অবিভক্ত বাংলা থেকে শুরু করে অসম একটা অংশ পর্যন্ত কোচবিহার রাজাদের সীমানা বিস্তৃত ছিল। ব্রিটিশদের অধীনে পরে করদ রাজ্য হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল কোচবিহার। যার ফলে প্রাচীন কোচবিহার শহরের স্থাপত্যে আজও লেগে রয়েছে ভিক্টোরিয়ান আর্কিটেক্ট। ব্রিটিশদের সময় থেকেই কোচবিহার শহরের নগরায়ণে লাগে আধুনিকতার ছোয়া। যার ঐতিহ্য আজও তারা বহন করছে। সরকারিভাবে কোচবিহার পুরসভার জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর।
কোচবিহার পুরসভায় ২০২২ সালের আগে ভোট হয়েছিল ২০১৫ সালে। একনজরে যদি সেই ফল দেখে নেওয়া যায় তাহলে দেখা যাচ্ছে কোচবিহার পুরসভায় ২০টি ওয়ার্ড রয়েছে। এরমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে ছিল ১০টি ওয়ার্ড। আর বামেদের দখলে ছিল ৮টি ওয়ার্ড। যারমধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লকের কাছে ছিল ৩টি ওয়ার্ড এবং সিপিএম-এর কাছে ছিল ৫টি ওয়ার্ড। ২টি ওয়ার্ড জয় করেছিল নির্দল প্রার্থীরা। ২ বছর আগেই এই পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রথমে কোভিড অতিমারির জন্য সেই ভোটগ্রহণ হয়নি। এরপর বিধানসভা নির্বাচনের জন্য তৎকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ভোট করায়নি। এই ২ বছর ধরে পুরপ্রশাসক দিয়েই পরিচালিত হচ্ছিল কোচবিহার পুরসভা।
কোচবিহার পুরভোট ২০২২-এ মোট ৮২ জন প্রার্থী লড়াই করছেন। ১ নম্বর ওয়ার্ডে মোট প্রার্থী সংখ্যা ৫। এখানে মূল লড়াই ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী চন্দনা মহন্তের সঙ্গে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী লিপিকা বর্মণের। তবে লড়াই থেকে এক্কেবারে দূরে ফেলে রাখা যাবে না বিজেপি-র সঞ্চয়িতা সাহাকে। ২ নম্বর ওয়ার্ডে মূলত লড়াইটা এবার মা ও ছেলের মধ্যে। এই ওয়ার্ডে প্রার্থী রয়েছেন মোট ৪ জন। কিন্তু মা মিনা তর-এর হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখানো উজ্জ্ব তর-কে দল প্রার্থী করেনি। যার ফলে ২ নম্বর ওয়ার্ডে মা মিনা তর-এর বিরুদ্ধেই নির্দাল প্রার্থী হিসাবে প্রার্থী হয়েছেন উজ্জ্বল। তবে মা-ছেলের এই লড়াই থেকে সিপিআই-এচর অনুজ মিত্র এবং মহুয়া রায়কে দূরে সরিয়ে রাখলে হবে না। যদিও, ভোটগ্রহণের পর তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যপক রিগিং-এর অভিযোগ এনেছে অন্যান্য রাজনৈতিক দল। ৩, ৪, ৯, ১০, ১৪ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন করে প্রার্থী রয়েছেন। ২ জন প্রার্থীর মধ্যে ভোটের লড়াইটা হচ্ছে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে। ৩ জন করে প্রার্থী লড়াই করছেন ৭, ৮, ১৭, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে। ৫ জন করে প্রার্থী লড়াই করছেন ১২, ১৫, ১৬, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। ৬ জন প্রার্থী ভোটের লড়াই লড়ছেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডে।
এই পুরসভার মূল ইস্যু নাগরিক পরিষেবার বেহাল দশাকে ঠিক করা। অতিমারির মধ্যে কোচবিহার পুরসভার কাজ নিয়ে সেভাবে খুশি নয় এই পুর এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়াও কোচবিহার শহরের আধুনিকতার ছোয়াটা লাগাটা প্রয়োজন বলেই মনে করেন এখান বাসিন্দারা। শহরের মধ্যে একাধিক পাঁচতারার মতো হোটেল তৈরি হলেও কোচবিহার শহরের পর্যটনকে ঘিরে সেভাবে কোনও ব্যাপক উদ্যোগ এখনও পর্যন্ত নেই। কোচবিহার শহরের একদম কেন্দ্র রয়েছে কোচবিহার প্যালেস। রানী গায়িত্রীদেবীর জন্মভূমিও বটে কোচবিহার। কিন্তু, প্রাচীনতার দাগ লেগে থাকলেও কোচবিহার ঐশ্বর্য বা আড়ম্বর এখন এক্কেবারেই ম্লান। এছাড়াও শহরের রাস্তাঘাটের সম্প্রসারণ হওয়াটা দরকার। কোচিবাহেরর পুরনো শহরকে হেরিটেজ ঘোষণা করে পাশাপাশি নতুন কোচবিহার শহর তৈরির আর্জিও বহু পুরনো। কিন্তু সে সব নিয়ে আজও কোনও পুরবোর্ড কাজ করেনি।