মাওবাদীদের শহীদ কমরেড রিমিল ও বিপ্লব-সহ একাধিক নেতার মৃত্যুর বদলা চেয়ে আজ বাগমুন্ডি থানার একাধিক এলাকায় মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার দেখতে পাওয়া যায়। পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের বাঘমুন্ডী থানা এলাকায় মাওবাদী পোস্টারকে কেন্দ্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।
পুরসভা নির্বাচনে (WB Municipal Election 2022) প্রহসনের অভিযোগ তুলে আজ ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধের (Bangla Bandh) ডাক দিয়েছিল বিজেপি (BJP)। আর ১ মার্চ অর্থাৎ আগামীকাল জঙ্গলমহল (Jangalmahal) জুড়ে বনধের ডাক দিল মাওবাদীরা (Maoist)। মাওবাদীদের শহীদ কমরেড রিমিল ও বিপ্লব-সহ একাধিক নেতার মৃত্যুর বদলা চেয়ে আজ বাগমুন্ডি থানার (Baghmundi Police Station) একাধিক এলাকায় মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার (CPI-Maoist poster) দেখতে পাওয়া যায়। পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের বাঘমুন্ডী থানা এলাকায় মাওবাদী পোস্টারকে কেন্দ্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। সাদা কাগজের উপর লাল কালীতে লেখা রয়েছে 'সরকারি ভাতা ও চাকরির লোভ দেখিয়ে মাওবাদী ছেলেদের রোখা যাবে না। তারা আবার জঙ্গলে ফিরে যাবে।' এছাড়াও জঙ্গলমহলের সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা কেন সরকারের পৌঁছায় না তা নিয়ে জঙ্গলমহলের দায়িত্বে থাকা পুলিশের এসপি, ডিএসপিদের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। প্রতিটি পোস্টারের শেষে লাল কালীতে লেখা রয়েছে "সিপিআই মাওবাদী দলমা বাবা"।
এদিকে এই পোস্টার ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। কারণ অতীতে দলমায় মাওবাদীদের সক্রিয় সংগঠন থাকলেও, এবার কি সেখানে সিপিআই মাওবাদী দলমা বাবা নামে নতুন সংগঠন তৈরি হয়েছে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নাকি তার মধ্যে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে? এই বিষয়গুলি অবশ্য এখনও পর্যন্ত স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে ভোটের পরে এবং গণনার ঠিক দুদিন আগে জঙ্গলমহলের বাগমুন্ডিতে একাধিক মাওবাদী পোস্টারকে কেন্দ্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
আরও পড়ুন- খুনের তারিখ-সময় লেখা মাওবাদী নামাঙ্কিত হুমকি চিঠি, আতঙ্কে দিন কাটছে প্রধান শিক্ষিকার
সোমবার বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বনধের সকালে এই মাওবাদী নামাঙ্কিত পোষ্টার উদ্ধার করে পুরুলিয়ার বাগমুন্ডি থানার পুলিশ। কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সরকার যতই বলুক জঙ্গলমহলে আর মাওবাদী নেই তা সম্পূর্ণ ভুল। তাদের উপস্থিতি এখনও রয়েছে এই এলাকায়।
আরও পড়ুন- খুনের হুমকি দিয়ে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার, নিরাপত্তা চেয়ে থানায় তৃণমূল নেতা
এদিকে পৌরসভা নির্বাচনের ঠিক একদিন আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি জঙ্গলমহলের আরও থানা আড়শা এলাকার মিশিরডি, জীবনডি ও বেলডি মোড়ে মাওবাদী পোস্টার উদ্ধার করেছিল আড়শা থানার পুলিশ। সেই পোস্টারগুলি ছিল সাদা কাগজে লাল কালীতে ছাপানো (অফসেট প্রিন্টিং)। পোস্টারের উপরে বড় করে লেখা ছিল "মাওবাদী জিন্দাবাদ"। নিচে লেখা ছিল "কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের কাছে ১১ দফা দাবি নিয়ে ফের জঙ্গলমহল জেলাগুলিতে আন্দোলন করতে চলেছি"। ১১ দফা দাবির মধ্যে ছিল অবিলম্বে পেট্রোল ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম কমাতে হবে। বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। এবং প্রতিটি নাগরিককে ১০০ দিনের বদলে ৩৬৫ দিনের কাজের সুযোগ সুবিধা করে দিতে হবে। পোস্টারে লেখা ছিল দুয়ারে মদ প্রকল্প বন্ধ করতে হবে। আর সেই পোস্টারগুলির ঠিক নিচে লেখা ছিল সিপিআই (মাওবাদী)।
আরও পড়ুন- “কিষানজীর মৃত্যুর বদলা চাই”, মাওবাদী পোস্টারে ফের ব্যাপক চাঞ্চল্য পুরুলিয়ায়
সব মিলিয়ে পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলের ব্লকগুলিতে একের পরে এক মাওবাদী পোস্টার ঘিরে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এলাকাগুলিতে। তবে এই পোস্টারগুলি সত্যিই মাওবাদীদের তরফে দেওয়া হয়েছে নাকি এলাকায় অন্য কেউ মাওবাদী আতঙ্ক ছড়াতে চাইছে তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।