নিম্ন চাপের বৃষ্টির পরে ফের বুলবুলের বৃষ্টি ঝড়ের প্রভাবে ক্ষতির আশঙ্কা ফসলের ৷ গত দু' সপ্তাহ আগে নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি হয়েছিল৷ প্রায় তিনদিন বৃষ্টির কারণে ধান ও অন্যান্য সব্জি ফসলের জমিতে জল জমেছিল৷ সেই পরিস্থিতি থেকে ফসলকে বাঁচাতে জমি থেকে জল বের করে কোনওক্রমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষকরা।
সেই দুর্যোগ সামাল দিতে না দিতেই ফের ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে ঝড় বৃষ্টি ৷ শুক্রবার সন্ধে থেকেই ফের ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শুরু হয়েছে টানা বৃষ্টি৷ যার জেরে কৃষকদের মাথায় হাত। ফের একবার ধান ও সব্জির জমিতে জল জমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে নতুন করে বোনা আলু চাষের জমিতেও জল জমে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে চাষিদের মধ্যে৷ আলু চাষের জন্য যে জমিগুলি তৈরি হয়ে গিয়েছিল, তাতেও জল জমতে শুরু করেছে৷ ফলে ফের জমি চাষের উপযোগী করে আলু চাষ শুরু করতেই অনেকটা দেরি হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা কৃষকদের। সব থেকে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে চন্দ্রকোনা,দাসপুর,ঘাটাল,কেশপুর এলাকাতে৷
অন্যদিকে প্রতিকূল আবহওয়ার কথা মাথায় রেখে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে কন্ট্রোল রুম খুলে সতর্ক নজরদারি রেখেছে জেলা প্রশাসন ৷ সমস্ত রকমের প্রস্তুতি নিয়ে তৈরী রয়েছে ৷ প্রতি মুহুর্তে ব্লক স্তরের আপডেট নিয়ে নজর রেখেছেন প্রশাসনের কর্তারা ৷
একই ছবি দেখা গিয়েছে বাঁকুড়াতেও। জেলার পূর্ব অংশে শনিবার সকাল থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। কোতুলপুর, জয়পুর- সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে শুরু হয়েছে বৃষ্টি সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। বৃষ্টি ও হাওয়ার দাপটে বিপর্যস্ত জনজীবন। বৃষ্টিতে ও দমকা হাওয়ায় আউশ ও আমন ধানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা। কৃষকদের দাবি, অনেকেরই কাটা আউশ ধান মাঠে পড়ে রয়েছে। আবার আমন ধানও কাটার অপেক্ষায়। এমন সময় হঠাৎ বুলবুলের তাণ্ডবের আচ পড়েছে ধান জমিতে। যার ফলে পাকা ধানে মই দেওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় মাথায় হাত পড়েছে বাঁকুড়ার অসংখ্য কৃষকের।
শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর বা বাঁকুড়া নয়, উত্তর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, হাওড়া, হুগলির মতো বিভিন্ন জেলাতেই বুলবুলের জেরে অসময়ের বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ায় চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। ধান চাষ তো বটেই, অসময়ের দুর্যোগে সব্জি চাষেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।