পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে হাতির আক্রমণে এক ব্যক্তির আহত হওয়ার খবরও শোনা যাচ্ছে। আহত ব্যক্তির নাম শেখ সিরাজুল হক
বৃহঃষ্পতিবার সকাল থেকেই একপাল হাতির তাণ্ডবে(elephant Attack) তটস্থ পূর্ব বর্ধমানের(East bardhaman) বড় অংশের বাসিন্দারা। এখনও বনকর্মীদের নাগালে আসেনি দামালের দলটি। এদিন সকালেই প্রথমে পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে(Galsi) ব্যাপক তাণ্ডব চালায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি দাঁতাল। নষ্ট হয়ে যায় বিঘের পর বিঘে জমির ধান। গলসির পর এবার আউশগ্রামের(Aushgram) নওয়াদা ও বিল্বগ্রামের মাঠে হাতির পালটি ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই এলাকায় গিয়েছেন বনকর্মীরা।
অন্যদিকে ওই এলাকাতেই হাতির আক্রমণে এক ব্যক্তির আহত হওয়ার খবরও শোনা যাচ্ছে। আহত ব্যক্তির নাম শেখ সিরাজুল হক। তিনি গলসির শিড়রাই গ্রামের বাসিন্দা বলে খবর। এদিকে হাতির দাপাদাপির খবর পেয়েই নওয়াদা গ্রামে উপস্থিত হয়েছেন জেলা বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী। বনকর্মীরা এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় মানুষজনকে সর্তক করতেও শুরু করেছেন। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ভোরে প্রথমে গলসিতে পড়ে ঢুকে পড়ে চল্লিশ থেকে বিয়াল্লিশটির ওই হাতির পাল।
হাতির হানায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা জেলাতেই। এদিকে সকাল থেকেই গলসি-নওয়াদা সহ একাধিক এলাকায় হাতির দল দেখতে ভিড় জমান স্থানীয় মানুষজন। হাতির হানায় সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে গলসি ও আউশগ্রামের চাষিদের। খবর পেয়ে ভোর থেকে সুরক্ষা দিতে হাজির হয়েছিল গলসি থানার পুলিশও। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে মাঠে নামে বনদপ্তর(Forest Department)। উপদ্রুত এলাকাগুলিতে হাতির পালটির গতিবিধি উপর নজর রেখে চলেছেন বনদপ্তরের কর্মীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গলসির সিংপুরে প্রথম ওই হাতির পালটিকে দেখতে পাওয়া যায়। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, বাঁকুড়া জঙ্গল থেকে দামোদর নদ পেরিয়ে গলসির কাশীপুর, শিল্লা হয়ে শিড়রাই চলে আসে দাঁতালের পালটি। পরবর্তীতে খানিক গতিপথ বদলে সিংপুরের মাঠে যায় হাতির দলটি।
আরও পড়ুন - ৪০ দাঁতালের তাণ্ডবে তীব্র আতঙ্ক পূর্ব বর্ধমানে, নষ্ট বিঘের পর বিঘে জমির ফসল
এরপরেই গলিগ্রাম বনসুজাপুর উচচগ্রাম কুতররুকী হয়ে খড়ি নদী পেরিয়ি আউসগ্রামের দিকে চলে যায় গোটা পালটিই। রাস্তায় যত জমি পড়ে সবই কমবেশি ছ্ত্রখান হয়ে যায়। আর তাতেই মাথায় পড়েছে একাধিক গ্রামের চাষিদের। এমনকী ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণেরও দাবি তোলা হয়েছে চাষিদের তরফে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী বর্তমানে সরগ্রাম হয়ে হাতির পালটি নওয়াদা গ্রামের মাঠের কাছে রয়েছে।
আরও পড়ুন - 'বাংলার জন্য কোনও পদক্ষেপ নেই', বিজেপি সঙ্গ ত্যাগ শ্রাবন্তীর
গোটা ঘটনায় রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজু, মজাফ্ফরের মতো স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকী ফসলের এই বিশালাকার ক্ষতি দেখে হতাশায় ভেঙে পড়েন অনেকেই। দ্রুত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় সেই দাবি তুলতে দেখা যায় স্থানীয় বাসিন্দা সেখ মুজাফ্ফর হোসেনকে। অন্যদিকে হাতির পালের এই ‘অবাধ বিচরণের’ জন্য বনদফতরের দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। তারা যদি আরও একটু সতর্ক হতেন, এমনকী দাঁতালের পালটিকে যদি দামোদরের চরেই আটকে যেওয়া যেত তাহলে হয়তো এত বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যেত। যদিও অভিযোগ প্রসঙ্গে বিশেষ উচ্চবাচ্য করতে চাননি জেলা বনদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা নিশা গোস্বামী (ডিএফও)। কীভাবে হাতির পাল লোকালয়ে ঢুকে পড়ল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।