ইন্দো-বাংলা সীমান্ত লাগোয়া মুর্শিদাবাদের পদ্মা গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় বিকট আওয়াজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অজানা হিংস্র পশুর দল। আতঙ্কে গোটা গ্রামবাসী একপ্রকার গৃহবন্দি। পশুর অত্যাচারে গরীব চাষীদের ফসল নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা সরকারি আর্থিক সাহায্যের আবেদনের দাবিতে সরব হয়েছেন।
হাড় কাঁপানো শীতের রাতে অজানা বন্য পশুর আতঙ্কে (Panic of wild animals) হাড় হিম হয়ে যাচ্ছে ইন্দো-বাংলা সীমান্ত লাগোয়া মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) পদ্মা গঙ্গা তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের (Local People)। মধ্যরাতের আতঙ্ক...রীতিমতো ঘুম ছুটেছে এলাকাবাসীদের। তবে এই সমস্যায় শুধু গ্রামবাসীরাই নয়, একেবারে নাজেহাল অবস্থা বনদফতরের আধিকারিকদেরও। প্রসঙ্গত, রাত যত গভীর হচ্ছে ততই দাপট বাড়ছে অজানা হিংস্র পশুদের। ইন্দো-বাংলা সীমান্ত লাগোয়া মুর্শিদাবাদের পদ্মা গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় বিকট আওয়াজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অজানা হিংস্র পশুর দল (Wild Animal)। আতঙ্কে গোটা গ্রামবাসী একপ্রকার গৃহবন্দি। এদিকে বিঘার পর বিঘা নষ্ট হচ্ছে ফসল। বাড়ির বাইরে কার্যত ভয়ে বেড়ানো বন্ধ করে দিয়েছেন রাতে গ্রামের মানুষজন। আর এলাকায় পশুর পায়ের ছাপ দেখা মেলার ফলে অনেকে এখন নিজের বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়র বাড়িতে গিয়ে আস্তানা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু গ্রামের মানুষ তো কৃষিকার্যের ওপরই নির্ভরশীল। সেই রকম পরিস্থিতিতে যদি ফসল ক্রমাগত নষ্ট হয়ে যায় তাহলে পশুর আতঙ্ক গ্রাস করার আগেই তো রুজি-রুটিতে টান পড়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। উল্লেখ্য, এই রকম কঠিন পরিস্থিতিতে কপালে চিন্তার ভাঁজ ইন্দো-বাংলা সীমান্ত লাগোয়া মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) পদ্মা গঙ্গা তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের (Local People)।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা সরকারি আর্থিক সাহায্যের আবেদনের দাবিতে সরব হয়েছেন। এই ফসলের বিমা পর্যন্ত করা নেই। ফলে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। এই গোটা বিষয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনিক কর্তা থেকে বনবিভাগের আধিকারিকদের। এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষিদপ্তরের অধিকর্তা অমৃতকুমার হাসদা বলেন, অজানা পশুর অত্যাচারে গরীব চাষীদের ফসল নষ্ট হচ্ছে সেই খবর তিনি পেয়েছেন। বিষয়টা খুবই চিন্তার এবং উদ্বেগজনকও বলেছেন তিনি। এদিকে কার্যত গোটা রাত পাহারা দিয়েও অজানা হিংস্র পশুর দলকে বাগে আনতে পারেছে না বনদফতরের কর্মীরা। শুধু তাই নয়, আতঙ্ক বাড়িয়ে শেষ পর্যন্ত সেই অজানা হিংস্র পশুর দলের আক্রমণে তিন জন নিরীহ গ্রামবাসী গুরুতর জখম পর্যন্ত হয়েছে। এই ঘটনার ফলে গ্রামজুড়ে এখন আকাশে বাতাসের কেবলই আতঙ্কের সুর।
আরও পড়ুন-সারের দামে কালোবাজারির অভিযোগে কৃষি দপ্তরে বিক্ষোভ, হানা সরকারি আধিকারিকদের
আরও পড়ুন-বাজেটে কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ নজর, একগুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর
আরও পড়ুন-Cauvery Calling: কাবেরী কলিং-এর বড় সাফল্য, ২ কোটি চারা রোপন হয়েছে বলে দাবি সদগুরুর
যতদূর জানা যাচ্ছে গঙ্গার ধারে এলাকার প্রায় শতাধিক চাষী চলতি মরসুমে চাষ করেছেন। যার মধ্যে আনুমানিক প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। গাছগুলো বেশও বড় হয়ে গিয়েছে।, ভুট্টাও ফলেছে গাছে। কিন্তু আকস্মিক এমন কাণ্ড ঘটে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে চাষীদের। অনেক বিঘা জমির ফসল সম্পূর্ণ তছনছ করে দিয়েছে এই অজানা হিংস্র পশুর দল। কৃষকরা তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, কোন হিংস্র অজানা পশু বা পশুর দল রাতে জমিতে ঢুকে এলাকা সম্পূর্ণ সাফ করে দেয়। এভাবে বন্য পশুর আক্রমণ জারি থাকলে তাঁরা হয়তো ঘরে ফসলই তুলতে পারবেন না। প্রাণের ভয়ে রাতে বাড়ি থেকে আপদ বিপদে বেরোনো পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এইভাবে চলতে থাকলে চরম আর্থিক ভোগান্তির সম্মুখীন হবে বলেও জানান তাঁরা।
স্থানীয় কৃষক জাহাঙ্গীর শেখ, মিনারুল হোসেন বলেন, ধারদেনা করে কোনও রকমে জমিতে ফসল ফলিয়ে ছিলেন। ফসল পেকে আসার মুখেই এই বিভ্রাট। প্রশাসন আর বনদপ্তর যদি তাঁদের হায়তায় এগিয়ে না আসে তাহলে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে। এই বিষয় বনদফতর আধিকারিকরা বলছেন, এমন কাণ্ডে গঙ্গা পার এলাকায় যথেষ্ট ভাবেই চিন্তার বিষয়। পুরো বিষয়টি ট্র্যাক করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।