পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, দাসপুর, শালবনি এলাকাতে সবথেকে বেশি আলুর চাষ হয়ে থাকে। ধান চাষও ব্যাপকভাবে হয়ে থাকে। কিন্তু গত বর্ষায় অতিবৃষ্টি ও বেশ কয়েকবারের বন্যায় ধান চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ (Cyclone Jawad)। আবহাওয়া দফতরের ঘোষণার পরই প্রশাসনের তরফে মাইকিং (Miking) ও নোটিশের (Notice) মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের জাওয়াদ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। আর জেলা প্রশাসনের (District Administration) সতর্কতার পরই আতঙ্কিত পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore district) কৃষকরা (Farmer)। সদ্য অতিবৃষ্টি (Heavy Rain) ও বন্যার (Flood) কবল থেকে মুক্তি পেয়েছেন তাঁরা। তার উপর ফের জাওয়াদের জেরে তাঁদের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আর এই জাওয়াদের জেরে ফসল যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য আগে থেকেই অনেক বেশি সতর্ক তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকালে সপরিবারে শালবনি এলাকায় কৃষকদের ভোর থেকেই মাঠে নামতে দেখা গিয়েছে। কেউ ধান তুলে নিচ্ছেন, কেউ মেশিনে কেটে দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টা করছেন, কেউ বা দ্রুত আলুর () বীজ ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন মাঠে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, দাসপুর, শালবনি এলাকাতে সবথেকে বেশি আলুর চাষ হয়ে থাকে। ধান চাষও ব্যাপকভাবে হয়ে থাকে। কিন্তু গত বর্ষায় অতিবৃষ্টি ও বেশ কয়েকবারের বন্যায় ধান চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ধান দ্রুত তুলে আলু রোপণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন চাষিরা। ঠিক সেই মুহূর্তেই আবহাওয়া দফতর ও প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হয় যে, জাওয়াদ আসছে। সম্ভব হলে এক থেকে দু'দিনের মধ্যেই ধান বাড়িতে তুলে নিন। আলু রোপণ করার হলে এক সপ্তাহ পিছিয়ে দিন।
এ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, "প্রশাসনের তরফে সর্বোচ্চ পঞ্চায়েত এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা এলাকাতে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। ধান তোলা সম্ভব হলে এক দু-দিনের মধ্যে তা তুলে নিতে বলা হয়েছে। আলু চাষের মত বিষয়গুলির ক্ষেত্রে একটু অপেক্ষা করতে অনুরোধ করা হয়েছে কৃষকদের। না হলে ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।"
আর প্রশাসনের এই সতর্কতা শুনেই ফের বিপদে পড়ে গিয়েছেন কৃষকরা। কারণ সবাই একসঙ্গে জমি থেকে ফসল তোলার চেষ্টা করায় মজুরের সংকট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শালবনি এলাকায় সপরিবারে বহু কৃষককে মাঠে নেমে পড়তে দেখা গিয়েছে। জমি থেকে ফসল তোলার কাজে হাত লাগান সবাই। কারণ আলুর বীজ বপনের জন্য জমির মাটি তৈরি করা হয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে। বৃষ্টি হয়ে গেলে সেই মাটি কাদা হয়ে যাবে, পিছিয়ে যাবে বীজ বপনের কাজ। তাই দ্রুত ঝড় বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে আলুতে মাটি চাপা দিতে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে।
অনেক কৃষকরা ইতিমধ্যেই মাঠের ধান বাড়িতে তুলে নিয়েছিলেন। জাওয়াদ ধেয়ে আসার আগে তাঁরা সেগুলি ঝেড়ে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় মরিয়া। অনেকেই মাঠের কেটে রাখা ধান দ্রুত পরিবারের সদস্যদের দিয়ে বয়ে নিয়ে তা বাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আর তাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পরিবারের সবাই। কারণ মাঠে রাখলে জল জমে পাকা ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।