আন্দোলনকারীদের দাবি, গোর্খাল্যান্ডের দাবি(Gorkhaland demands) পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েই প্রতিবার রাজনৈতিক দল দার্জিলিং(Darjeeling) আসন জিতে নেয়। কিন্তু দাবি পূরণ হয় না। তাই পাহাড়বাসীর স্থায়ী সমাধান আদায় করতে চলতি মাসের পাঁচ থেকে সাত তারিখ পর্যন্ত তারা দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্নায় বসবেন।
গোর্খাল্যান্ড নিয়ে পাহাড়বাসীর দাবি(Gorkhaland demands) ক্রমেই যেন স্তিমিত হচ্ছিল বিগত কয়েক বছর ধরেই। একাধিক ইস্যুতে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের(Gorkhaland movement) অন্যতম মুখ বিমল গুরুংয়ের তৃণমূল(Trinamool) যোগ। মোর্চার ভেঙে যাওয়ায় ক্রমেই পারাপতন দেখা গিয়েছে হয়েছে আন্দোলনের দীপ্ততায়। এমতাবস্থায় এবার আলাদা রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবি নতুন করে সামনে রেখে ধর্নায় বসতে চলেছে গোর্খাল্যান্ড অ্যাক্টিভিস্ট সমূহ। তবে এবার তা রাজ্যের বুকে নয় একেবারে রাজধানীর বুকে।ইতিমধ্যেই বৃহঃষ্পতিবার আন্দোলনকারীদের(Activist) একটি দল দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনাও হয়ে গিয়েছে।
এদিকে আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে একাধিকবার পাহাড়ে সরব হয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল। আলাদা রাজ্যের দাবিতে বারংবার উত্তপ্তও হয়ে উঠেছে পাহাড়ের মাটি। লেগেছে আগুন, প্রানহানিও হয়েছে বহু আন্দোলনকারীর। কিন্তু কেন্দ্র বা রাজ্যে কোনও সরকারই এখনও মেনে নেয়নি পাহাড়বাসীর দাবী। তবে দুই সরকারই চেয়েছে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি, গোর্খাল্যান্ডের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েই প্রতিবার রাজনৈতিক দল দার্জিলিং আসন জিতে নেয়। কিন্তু দাবি পূরণ হয় না। তাই পাহাড়বাসীর স্থায়ী সমাধান আদায় করতে চলতি মাসের পাঁচ থেকে সাত তারিখ পর্যন্ত তারা দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্নায় বসবেন।
আরও পড়ুন-মদ বিক্রি বন্ধ নিয়ে মমতাকে প্রশ্ন মেধার, বাণিজ্যনগীরতে অস্বস্তিতে তৃণমূল সুপ্রিমো
ধর্না মঞ্চে থাকবে ১৫ সদস্যের একটি দল। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি গোর্খাল্যান্ড অ্যাক্টিভিস্ট সমূহ হিংসাতে বিশ্বাসী নয়, অহিংসার পথে ধরে শান্তিপূর্ণ ভাবে তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করে যাবেন তারা। তাদের সাফ দাবি আর কোনও প্রতিশ্রুতি নয়, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগেই তাদের দাবি পূরণ করতে হবে। এদিন শিলিগুড়ির(Siliguri) জংশনে সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখার সময় সংগঠনের আহবায়ক কিশোর প্রধান বলেন, “আমরা অতীতেও দেখেছি পৃথক রাজ্যের দাবিতে পাহাড়ে আন্দোলন হলে সেই আন্দোলনে প্রচুর পাহাড়বাসি শহীদ হয়েছেন। অনেকে জেলবন্দিও ছিলেন। তবে আর একই পদ্ধতিতে আন্দোলন নয়। এবার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাহাড়ের মানুষের দাবিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সরকারকে কথা বলতেই হবে। আমরাও আর চুপ করে থাকব না।”
আরও পড়ুন-ভিন রাজ্যে কাজের খোঁজে যাওয়ার পথে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু
এদিকে ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলে দেখা যাবে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে গত কয়েক দশক ধরেই বারংবার উত্তপ্ত হয়েছে পাহাড়। ৯৮৮ সালে গোর্খাল্যান্ডের দাবি তৎকালীন পাহাড়ের সম্রাট সুভাষ ঘিসিংয়ের আমলে টানা আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়েছিল পাহাড়ের অলিগলি। পরবর্তীতে পৃথক রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে ২০০৭ সালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা দল প্রতিষ্ঠা হলে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে পাহাড়ের আন্দোলন ফের উত্তপ্ত হয়। তারপর থেকে চলতে থাকে টানা আন্দোলন। এমনকী সাম্প্রতিককাসে ২০১৭ সালে জোরদার আন্দোলন দেখেছে পাহাড়বাসী। এবার গোর্খাল্যান্ডের দাবি দিল্লির(delhi) দরবারে পৌঁছে যাওয়ায় তাতে সরকারের উপর কতটা চাপ বাড়ে এখন সেটাই দেখার।