তুকতাকে প্রাণ গেল চার বছরের শিশুর, তবু কুসংস্কারেই আস্থা গোটা গ্রামের

  • দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার জীবনতলার ঘটনা
  • পুকুরে ডুবে যায় চার বছরের শিশু
  • হাসপাতালে না নিয়ে তুকতাকে আস্থা
  • হাসপাতালে না নিয়েই বাড়ল বিপদ

debamoy ghosh | Published : Feb 15, 2020 8:49 PM IST

জলে ডুবে গিয়েছিল চার বছরের শিশু। যখন উদ্ধার হলো, তখনও তার দেহে প্রাণ রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরেই পুকুরের মধ্যে শিশুকে নিয়ে চলল তুকতাক। দীর্ঘক্ষণ পর যখন শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো, তখন চিকিৎসকদের আর কিছু করার ছিল না। 

এ ভাবেই ফের কুসংস্কারের বলি হল এক শিশু। মৃত শিশুটির নাম ফরিদ সর্দার(৪)। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার জীবনতলা থানার অন্তর্গত উত্তর পাতিখালি গ্রামে। 

এ দিন দুপুরে ফরিদ বাড়ির পাশেই একটি পুকুরে পড়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজি করেন পরিবারের সদস্যরা। বেশ কিছুক্ষণ পর পুকুর থেকে উদ্ধার হয় ফরিদ। এর পর তড়িঘড়ি চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে ওই শিশুকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কারসাজি চলতে থাকে পুকুরের পারে। পুকুরের জল পিটিয়ে, পুকুরের পাশে আগুন জ্বালিয়ে বিভিন্ন রকমের তুকতাক করে ফরিদকে বাঁচানোর চেষ্টা চালান গ্রামবাসীরা সময় যত গড়াতে থাকে, ততই বিপদ বাড়তে ছোট্ট শিশুটির। 

কুসংস্কারের নামে দীর্ঘক্ষণ এ ভাবে শিশুটিকে নিয়ে নানারকম কাণ্ডকারখানা চলার পর স্থানীয় এক চিকিৎসক কুতুবউদ্দিন সর্দার পরিবারের লোককে বুঝিয়ে তাকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর মৃত্যু হয় ফরিদের। চিকিৎসকদের দাবি. আরও আগে হাসপাতালে শিশুটিকে নিয়ে আসা হলে হয়তো তাকে বাঁচানো সম্ভব হতো। শুধুমাত্র কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে জল পিটিয়ে শিশুর প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা করতে গিয়ে উল্টে তার মৃত্যু ডেকে আনল পরিবার।

এই ঘটনার পরেও অবশ্য নিজেদের বিশ্বাসেই অনড় গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, জলের মধ্যেই শিশুটির প্রাণ আটকে থাকে। তুকতাক করে আগে সেই প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হয়। তার আগে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কোনও লাভ নেই। এর আগে এই পদ্ধতিতেই গ্রামে আরও শিশুর প্রাণ বেঁচেছে বলেও দাবি স্থানীয়দের। 

Share this article
click me!