Kali Puja 2021- স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবীকে জঙ্গল থেকে আনা হয় হট্টেশ্বর রায় বাড়িতে, পুজোর ভোগ মাছভাজা

স্থানীয়রা জানান, এলাকায় জমিদার হট্টেশ্বর রায় প্রথম কালীপুজো শুরু করেছিলেন। তবে গ্রামের মধ্যে নয়। জনপদের বাইরে জঙ্গলের মধ্যে নিশুতি পথে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শ্মশান কালীর। 

জমিদারি নেই, তবুও রীতি বহাল রেখে চলে আসছে নিয়ম। স্বপ্নাদেশে প্রায় শতাব্দী প্রাচীন ৪৫০ আগে মায়ের উদ্ভব হয়েছিল। জঙ্গল থেকে জমিদার বাড়িতে মাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তারপর থেকে সেই রীতির আজও কোনও নড়চড় হয়নি। নিয়ম করে শ্যামা মায়ের আরাধনায় তার নিজস্ব পুকুর থেকে মাছ তুলে এনে নানান রকমের ভাজা সহ, লুচি ,পায়েস, তরকারি পঞ্চ ব্যঞ্জন দিয়ে ভক্তিভরে অমাবস্যা তিথিতে সম্পন্ন হয় মুর্শিদাবাদের হট্টেশ্বর রায় বাড়ির কালীপুজো।

এই পুজোর সঙ্গে জড়িত রয়েছে নানান ধরনের অজানা কাহিনি। পরবর্তীতে এই জমিদার বাড়ির পুজো চালু হওয়ার পর এই এলাকায় ধাপে ধাপে কালীপুজোর প্রচলন শুরু হয়। তবে স্থানীয়রা জানান, এলাকায় জমিদার হট্টেশ্বর রায় প্রথম কালীপুজো শুরু করেছিলেন। তবে গ্রামের মধ্যে নয়। জনপদের বাইরে জঙ্গলের মধ্যে নিশুতি পথে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শ্মশান কালীর। কথিত আছে, পরবর্তীকালে মা কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন তিনি। তারপরই মাকে গ্রামের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেই থেকেই গ্রামে কালী পুজোর শুরু। 

Latest Videos

গ্রামের পূর্ব দিক দিয়ে বয়ে গিয়েছে দ্বারকা নদী। সেই নদীর একটি অংশে তৎকালীন এই শ্মশানকালীর প্রতিষ্ঠা করা হয়। তারপর থেকেই ওই পুজো জমিদার হট্টরায়ের কালীপুজো নামে পরিচিত। কিন্তু, ক্রমশ সেই সময় ওই কালী জনপদ থেকে দূরে পূজিত হওয়ার কারণে মানুষজনের আনাগোনা একেবারেই কম ছিল সেখানে। ফলে খানিকটা অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকতে হচ্ছিল শ্যামা মাকে। এরই মধ্যে বয়স জনিত কারণে জমিদার হট্টেশ্বর রায়ের জীবনাবসান হয়। পরবর্তীতে তার বংশধর শ্যামাচরণ রায়কে স্বপ্নাদেশ দেন দেবী। তিনি জানান, গ্রামের বাইরে শ্মশান থেকে গ্রামের ভিতরে দালানে নিষ্ঠাভরে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করা হোক। নির্দেশ পাওয়ামাত্রই কালবিলম্ব না করে,শ্যামাচরণ রায় গ্রামের পাঁচপাড়ায় ওই কালীকে পুনঃপ্রতিষ্টা করেন।

পরবর্তীকালে শ্মশান কালীর নাম পরিবর্তন হয়ে শ্যামরায় কালী নামে পরিচিত হয়। গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, দীপান্বিতা অমাবস্যায় প্রতিমা গড়ে পুজো হলেও সারাবছরই নিত্যপুজো হয় সেই শতাব্দী প্রাচীন সময় থেকে। সম্প্রতি মায়ের একটি কংক্রিটের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে সেই মূর্তিতেই পুজো হয়। পুজোর দিন মাকে নানার ধরনের পদ ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়। পাঁচ রকমের ফল ও মিষ্ঠির সঙ্গে সুজির পায়েস দিতে হয়। দুপুরে লুচি সঙ্গে পাঁচটি ফল ও সুজির পায়েসও দেওয়া হয়। রাতে প্রধান পুজোতে দেবীর নিজস্ব পুকুর থেকে মাছ ধরে ওই মাছ ভাজা, গোটা মটর ভাজা, ছোলা ভাজা, বাদাম ভাজা, বেগুন ভাজা, ভাত, পাঁচটি সবজি দিয়ে ভোগ দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। 

জাগ্রত এই শ্যামা মায়ের টানে প্রতিবছর ভিন রাজ্য থেকে মানুষজন মনোস্কামনা পূর্ণ করতে এখানে আসেন। যদিও এবছর করোনার কারণে প্রতিবেশী রাজ্য থেকে তেমন বেশি সংখ্যক মানুষের আগমণ ঘটেনি। এ প্রসঙ্গে মন্দিরের সেবায়েত লক্ষণ মুখোপাধ্যায় বলেন, "এই পুজোকে ঘিরে এলাকার মানুষের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তবুও করোনা বিধিনিষেধ মেনে যথেষ্ট সচেতনতার সঙ্গে এবারের পুজো সম্পন্ন হচ্ছে।"

Share this article
click me!

Latest Videos

Live: সাংবাদিক সম্মেলনে শমীক ভট্টাচার্য ও শিশির বাজোরিয়া, কী বলছেন, দেখুন সরাসরি
জগদ্দলে গুলি ও বোমাবাজি, তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক-কে দায়ী করলেন অর্জুন সিং | Arjun Singh
চরম উত্তেজনা মাদারিহাটে, বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহারের গাড়িতে হামলা তৃণমূল সমর্থকদের
‘ওপারে ইউনূস এপারে মমতা দুজনেই এক’ মমতাকে তোপ শুভেন্দুর, দেখুন কী বললেন | Suvendu Adhikari
সাংবাদিকদের দেখেই দে ছুট! চাঞ্চল্য গোটা এলাকায়, ব্যপার কী? দেখুন