
এসএসসি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরীক্ষায় নম্বরের বিভাজন কার সিদ্ধান্তে করা হয়েছিল? এবার তা জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। জানা গিয়েছে, এসএসসি-এর থেকে নথি তলব বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের। নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে নম্বর বিভাজন এবং শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা নিয়ে কড়া মন্তব্য বিচারপতি সৌমেন সেনের। আগামী সোমবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি ২০১৬ এর প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতেও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে গত ৩০ মে এসএসসি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষা দফতর। সেই নিয়োগ বিধিকে চ্যালেঞ্জ করেই হাইকোর্টে মামলা হয়।
শুক্রবার এসএসসি-এর থেকে নথি তলব করেন বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের স্কুল সার্ভিস কমিশন যে হলফনামা জমা দিয়েছিল, তা এবার তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নম্বর বিভাজন নিয়েও আদালত কড়া মন্তব্য করেছে বলে জানা গিয়েছে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরীক্ষায় নম্বরের বিভাজন কার সিদ্ধান্তে করা হয়েছিল, তা স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে জানতে চান বিচারপতি সৌমেন সেন।
এদিন এসএসসি-এর উদ্দেশ্যে একাধিক প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বলেন, ‘’এসএসসি কি শূন্যপদের সংখ্যা বাড়াতে পারে? অতিরিক্ত শূন্যপদ যোগ করতে পারে? ২০১৬ সালের নিয়ম মানলে তার মধ্যেই যোগ্যতামান নির্দিষ্ট? পূর্বের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গোটা নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিল হয়ে গেলে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সকলের অভিজ্ঞতাই শূন্য হয়ে যায়। তাই যদি পূর্বের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা গ্রহণ করি, যা ২০১৬ সালের রুলে ছিল না। তাহলে আদালতকে বলতে হবে, ২০২৫ সালের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র যোগ্য এবং শারীরিকভাবে সক্ষমদের জন্য সীমাবদ্ধ সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে এসএসসি। সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র বয়সের ছাড় দিয়েছে। কাজেই শিক্ষাকতার অভিজ্ঞতার বিষয়টি ধোঁয়াশাযুক্ত।''
আদালতের র্পশ্নের জবাবে এসএসসি জানায় যে, ''২০২৫ সালের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা সংযুক্ত করা হয়েছে। রুল তৈরি করে রাজ্য সরকার। এবং বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শূন্যপদ ঘোষণা করে এসএসসি।'' এরপর বিচারপতি সৌমেন সেন বলেন, ‘’এসএসসি ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, ২০১৬ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাতিল হওয়া শূন্যপদে ২০১৬ সালের নিয়ম মেনেই নিয়োগ করতে হবে। নতুন শূন্যপদ যোগ করে নিয়োগ করলে তা হবে ২০২৫ সালের নতুন নিয়ম মেনে।'' একই সঙ্গে নবম ও দশমের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিধি কী, তাও মামলাকারীদের জিজ্ঞাসা করেন বিচারপতি।
শুক্রবার মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য্য, ফিরদৌস শামিম, সুদীপ্ত দাশগুপ্তরা সওয়ালে বলেন, ‘’২০১৬ সালের ঘোষিত শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনেই চলা উচিত এসএসসি-র। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে ২০২৫ সালের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কোনও ভাবেই সংযুক্ত করা যায় না। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সেই সালের নিয়ম মেনেই করতে হবে। ২০১৬ সালের সমস্ত পরীক্ষার্থীকে এসএসসি-র নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া উচিত। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বলে দিয়েছে, কোনও অতিরিক্ত সুবিধা সুযোগ পাবেন না শিক্ষকরা। কিন্তু নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বয়স এবং ন্যূনতম যোগ্যতা মার্কসে বদল আনা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অমান্য করা হয়েছে।'' যদিও মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার হবে।