ডিভিসি-র ছাড়া জলে জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়া নিয়ে গতকালই ম্যান মেড বন্যার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, "যদি বৃষ্টির জন্য আমাদের বন্যা হত, তাহলে এটা বুঝতাম, যে বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। সেটাকে আমরা সামলাচ্ছি। কিন্তু, বন্যা তো আল্টিমেটলি হচ্ছে জল ছাড়ার জন্য। ম্যান মেড ফ্লাড।"
একে টানা বৃষ্টি তারপর উপর আবার ডিভিসি-র (DVC) জল ছাড়া। এই দুয়ের জেরে পুজোর আগে ভাসছে রাজ্যের (West Bengal) একাধিক জেলা। বিভিন্ন জেলায় ভেঙে গিয়েছে নদী বাঁধ (River Barrage)। যার জেরে সমস্যায় পড়েছেন বহু মানুষ। বন্যা পরিস্থিতি (Flood like Situation) খতিয়ে দেখতে আজ আরামবাগে (Arambag) যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আরামবাগের বিভিন্ন জলমগ্ন (Water Logged) এলাকায় যান তিনি। কথা বলেন দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে।
ডিভিসি-র ছাড়া জলে জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়া নিয়ে গতকালই ম্যান মেড বন্যার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, "যদি বৃষ্টির জন্য আমাদের বন্যা হত, তাহলে এটা বুঝতাম, যে বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। সেটাকে আমরা সামলাচ্ছি। কিন্তু, বন্যা তো আল্টিমেটলি হচ্ছে জল ছাড়ার জন্য। ম্যান মেড ফ্লাড।"
আজ বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য ডুমুরজলা স্টেডিয়াম থেকে কপ্টারে রওনা দেন মমতা। আকাশপথে হুগলির খানাকুল ও গোঘাটের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তারপর নামেন আরামবাগের দৌলতপুরে হেলিপ্যাডে। সেখানে দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার পর ডিভিসির জল ছাড়ার পরিমাণের তথ্য দিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, "রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছেড়েছে ডিভিসি। এই অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণেই জলের নিচে গ্রামের পর গ্রাম। ৮ টি জেলার বিভিন্ন এলাকা জলের তলায়। সাড়ে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি। তার ফলে হাওড়া, বীরভূম, হুগলি, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গায় জল ঢুকে গিয়েছে।"
আরও পড়ুন- বন্যার ইস্যু তুলে মমতাকে তোপ সুকান্ত-রাজুদের,গান্ধীজয়ন্তীতে স্বচ্ছতা অভিযান BJP-র
তিনি আরও বলেন, "মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। বছরে ৪ বার করে জল ছাড়লে মানুষ বাঁচবে কীভাবে? এরকম চলতে থাকলে ডিভিসি ক্ষতিপূরণ দিক। মাঝরাতে কাউকে না বলে ডিভিসি জল ছেড়েছে। এটা অপরাধ। পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড আমাদের বন্ধু। এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য ওদের অনুরোধ করব।" ড্রেজিং করলে ডিভিসি-র জলাধারে আরও বেশি জল ধরত বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।
আরও পড়ুন, COVID 19: চব্বিশ ঘন্টায় সংক্রমণ কমলেও ৭০০-র উপরে কোভিড গ্রাফ, শীর্ষে কলকাতা
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী যাওয়ার আগেই তাঁর নির্দেশে দুর্গত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন একাধিক মন্ত্রী। আজ খড়গপুর লাগোয়া মেদিনীপুরে কংসাবতীর লকগেট পরিদর্শনে যান মানস ভুঁইয়া। বাঁকুড়ায় যাচ্ছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পূর্ব বর্ধমানে অরূপ বিশ্বাস, হুগলিতে ফিরহাদ হাকিও ও বেচারাম মান্না।
আরও পড়ুন- নিম্নচাপের জের, আজ প্রবল বর্ষণ উত্তরবঙ্গে, পশ্চিম ভারত থেকে বর্ষা বিদায়ের পূর্বাভাস
রাজ্যের আকাশে দুর্যোগের কোনও শেষ নেই। একের পর এক দুর্যোগ লেগেই ছিল। নিম্নচাপের জেরে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ার ফলে একাধিক গ্রাম জলের তলায়। নষ্ট হয়েছে ফসলও। ভেঙে পড়েছে একাধিক বাড়ি। ভিটেমাটি হারিয়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। পুজোর আগে এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো সমস্যার মুখে পড়েছেন বহু মানুষ। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে শিলাবতী, ঝুমি নদী। প্লাবিত ঘাটালের একাধিক গ্রাম। পশ্চিম মেদিনীপুরে বন্যা পরিস্থিতির জেরে সবং, পিংলা ও ডেবরার একাংশ জলমগ্ন। ডিভিসি-র ছাড়া জলে ভাসছে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরও।