জয় শ্রীরাম বিতর্কে এবার নতুন সংযোজন। সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া ইদের শুভেচ্ছাবার্তাতেও জয় শ্রীরাম লিখে উত্তর দিলেন অনেকে। তৃণমূলের অভিযোগ, এ সমস্তই বিজেপি-র চক্রান্ত।
প্রতি বছরের মতো এবারেও ইদের দিন সকালে রেড রোডে নমাজ পাঠের অনুষ্ঠানে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি ফেসবুক এবং টুইটারেও খুশির ইদের শুভেচ্ছাবার্তা জানান মুখ্যমন্ত্রী। টুইটারে মমতা লেখেন, "সকলকে জানাই খুশির ইদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আসুন, বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের এই ধারাকে বজায় রাখি। একতাই সম্প্রীতি- এটাই হোক আমাদের মন্ত্র।"
মুখ্যমন্ত্রী এই পোস্ট করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাতে অনেক টুইটার ব্যবহারকারী জয় শ্রীরাম লিখে কমেন্ট করতে থাকেন। শুধু টুইটার নয়, ফেসবুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা পোস্টেও একই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। শুধু সাধারণ কমেন্ট নয়, অনেকেই কমেন্ট সেকশনে জয় শ্রীরাম নিয়ে নানা রকম মিম, কার্টুন পোস্ট করেন মমতাকে ট্রোল করে। মুখ্যমন্ত্রীর অনেক পোস্টেই বিভিন্ন সময়ে অনেক ভিন্নমত পোষণ করে তির্যক মন্তব্য করে থাকেন। কিন্তু মমতার এ দিনের পোস্টে এমন কমেন্টের সংখ্যা লক্ষণীয়ভাবে বেশি ছিল।
শুধু ইদ নিয়ে মমতার পোস্ট নয়, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে তিনি যে পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় করেন, তাতেও একই ভাবে জয় শ্রীরাম লিখে কমেন্ট করেন অনেকে।
বিজেপি-র প্রথম সারির নেতারা স্পষ্টতই বুঝিয়ে দিয়েছেন, জয় শ্রীরামকে অস্ত্র করে মমতাকে নিশানা করার চেষ্টা জারি থাকবে। রাজনৈতির বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির ফায়দা নিতেই এই কৌশল নিয়েছে গেরুয়া শিবির।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য ইতিমধ্যেই ফেসবুকে পোস্ট করে দাবি করেছেন, জয় শ্রীরাম নিয়ে তাঁর মন্তব্যের অপব্যাখ্যা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্যে ধর্মীয় উস্কানি দিতেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জয় শ্রীরামের মতো ধর্মীয় ধ্বনিকে ব্যবহার করছে বিজেপি।
এ দিনও যেভাবে মমতার পোস্টে প্রচুর সংখ্যক জয় শ্রীরাম লেখা কমেন্ট পড়েছে, তাতেও এর পিছনে বিজেপি-র হাত আছে বলে নিশ্চিত তৃণমূল নেতারা। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জয় শ্রীরাম লেখা কোনও কমেন্টই কিন্তু মোছা হয়নি বলে আপাতভাবে মনে হচ্ছে।
জয় শ্রীরাম নিয়ে বিজেপি-র কৌশলের পাল্টা জয় বাংলা. জয় হিন্দ এবং বন্দে মাতরমকে হাতিয়ার করেছে তৃণমূল। বিজেপি-র পক্ষ থেকে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে জয় শ্রীরাম লেখা কার্ড পাঠানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে, একই ভাবে তৃণমূলও জয় হিন্দ, জয় বাংলা লেখা চিঠি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পাঠাতে শুরু করেছে তৃণমূল। সবমিলিয়ে বাংলায় জয় শ্রীরাম বিতর্ক তুঙ্গে।