কোনও কিছুতেই যেন রাশ টানা যাচ্ছে না। নিত্যদিনই শিরোনাম-গণধোলাই। কখনও চোর, কখনও ডাইনি সন্দেহে মার তো রয়েছেই। আর এবার রাতে প্রেমিকার ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে তার পরিবারের হাতে চোর অপবাদে ল্যাম্প পোস্টে বেঁধে গণধোলাই দেওয়া হল প্রেমিককে।
গুরুতর জখম সেলিম শেখ নামের ওই প্রেমিক যুবককে পুলিশ উদ্ধার করে প্রথমে কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে, কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হতে থাকায় সোমবার তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানন্তরিত করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে আহতের বুকে, কোমরে ও মাথায় জোর আঘাত রয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটে লালগোলা থানার বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহাদুরপুর কলোনি এলাকায় ।ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকা জুড়ে চাপা উত্তেজনা লক্ষ করা যায়। পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এলাকায় উপস্থিত হন স্থানীয় ওসি সৌম্য দে। তিনি বিশিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলে পরিবেশ শান্ত করেন।
আহতের সেলিমের পরিবার ছেলেকে প্রানে মারার চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন। এই ব্যাপারে মেয়ের বাবা রমেশ হালদার , দাদা দিবাকর হালদার ও প্রতিবেশী অক্ষয় হালদার-সহ বেশ কয়েক জনের নামে অভিযোগের আঙুল উঠছে। শেষ পাওয়া খবরে পুলিশ জানায় কেউ আটক হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,থানার বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মল্লিকপুর গ্রামের বাসিন্দা সেলিম শেখ পড়শি গ্রাম বাহাদুরপুর কলোনির বাসিন্দা রিমা হালদারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বছর তিনেকের এই সম্পর্কের কথা পাড়া-প্রতিবেশীদের অজানা নয়। অভিযোগ,রাতে প্রেমিকার ডাক পেয়ে ওই যুবক কলোনি এলাকায় পৌঁছয় । সুযোগ বুঝে প্রেমিকার বাড়ির লোকজন চোর অপবাদ দিয়ে সেলিমকে ল্যাম্প পোষ্টে বেঁধে ভারী লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় । অবস্থা বেগতিক দেখে এলাকার বাসিন্দারা লালগোলা থানায় খবর দেয় । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থালে উপস্থিত হলে , পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখায় মেয়ের বাড়ির লোকজন । তবে পুলিশ জখম যুবককে বাঁধন মুক্ত করে হাসপাতালে নিয়ে যায় । এই ব্যাপারে আহতের বাবা মোমিন শেখ বলেন,“ ছেলে মেয়ে উভয়েই প্রাপ্তবয়স্ক। এখন ওরা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছে। আমার আর কী বলার আছে। তবে কৌশল করে ছেলেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে যে ভাবে ইলেকট্রিক পোলে বেঁধে মেরেছে তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না । কার্যত ওরা আমার ছেলেকে প্রাণে মারতেই চেয়েছিল । পুলিশের কাছে আবেদন দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক ।” এদিকে রিমা হালদারের বাবা রমেশ হালদাররের সঙ্গে এদিন যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।বাড়িতেও কাউকে পাওয়াও যায়নি ।