শুক্রবার রাজপুর সোনারপুর পুর সভার বড়াল কার্যালয়ে টিকাকরণ ক্যাম্প চলছিল। টিকা নেওয়ার জন্য আগে থেকেই মায়ের ও নিজের নাম রেজিস্টার করে রেখেছিলেন শীর্ষনাথ।
বয়স্ক মাকে নিয়ে করোনার টিকা নিতে গিয়েছিলেন সোনারপুর বড়াল সর্দার পাড়ার বাসিন্দা শীর্ষনাথ পণ্ডিত। কিন্তু, তাঁকে দেখা মাত্রই রীতিমতো রে রে করে উঠলেন টিকাকেন্দ্রের লোকেরা। মুখ ঝামটা দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হল তাঁকে। বৈধ কুপন ও আধার কার্ড থাকার পরও টিকা পেলেন না তিনি। শীর্ষনাথের 'দোষ' ছিল একটাই। টিকা নিতে যাওয়ার সময় তাঁর পরনে ছিল হাফপ্যান্ট। তার জন্যই টিকা না নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয় তাঁকে।
শুক্রবার রাজপুর সোনারপুর পুর সভার বড়াল কার্যালয়ে টিকাকরণ ক্যাম্প চলছিল। টিকা নেওয়ার জন্য আগে থেকেই মায়ের ও নিজের নাম রেজিস্টার করে রেখেছিলেন শীর্ষনাথ। এরপর দুপুর ৩টে নাগাদ ওই কার্যালয়ে টিকা নিতে যান। সঙ্গে তাঁর মা-ও ছিলেন। কিন্তু, টিকা শিবিরে ঢুকতে যেতেই পুরসভার কিছু লোক এবং স্থানীয় কয়েক জন তাঁদের আটকে দেন বলে অভিযোগ। জানানো হয় হাফপ্যান্ট পরে শীর্ষনাথ অফিসের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকী, তাঁকে সেই সংক্রান্ত নোটিশও দেখানো হয়। যেখানে লেখা, 'অফিস চত্বরে হাফপ্যান্ট পরিধান অবস্থায় প্রবেশ নিষিদ্ধ'।
আরও পড়ুন- ধৃতদের জামিন মেলার আগেই চার্জশিট পেশ, মাস্টার স্ট্রোক CBI-র
এ প্রসঙ্গে শীর্ষনাথ বলেন, "টিকা নিতে গিয়ে এভাবে ফিরে আসতে হবে ভাবিনি। হাফপ্যান্ট পরে গিয়েছি বলে টিকা দিল না। টিকা পাওয়ার যোগ্যতা কোনও বিশেষ পোশাক হতে পারে। মা-কে নিয়ে দুপুর ৩টে নাগাদ রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার বড়াল কার্যালয়ে টিকা নিতে গিয়েছিলাম। কুপনও ছিল আমাদের হাতে। কিন্তু টিকা শিবিরে ঢুকতে যেতেই পুরসভার কিছু লোক এবং স্থানীয় কয়েক জন আমাদের আটকে দিলেন। আমায় বলা হল, ‘হাফপ্যান্ট পরে ঢোকা যাবে না।’তখনও জানি না, কী ব্যাপার। জিজ্ঞাসা করলাম, ‘হাফপ্যান্ট পরে ঢোকা যাবে না কেন? এখানে তো কোনও পোশাকবিধি থাকার কথা নয়। কোনও খবরেও শুনিনি’। তখন বলা হল, ‘ভিতরে গিয়ে দেখুন, নোটিশ টাঙানো রয়েছে।’ এরপর ভিতরে গিয়ে দেখলাম সত্যিই একটি নোটিশ রয়েছে। আমাকে টিকা নিতে দেননি ওঁরা। অনেক কষ্ট করে মায়ের টিকা হয়েছে।"
আরও পড়ুন- 'সরকারের অক্সিজেন পেয়েই বিশ্বভারতীতে আখড়া বামেদের', বিস্ফোরক দিলীপ, পাল্টা কুনাল-সুজনরাও
তবে এই সামান্য কারণেই জন্য এক যুবককে টিকা না দেওয়ায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। হাফপ্যান্ট পরা থাকলে টিকা মিলবে না, এমন কোনও নিয়ম নেই। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরও এই ধরনের কোনও আইন তৈরি করেনি। তাহলে কেন হঠাৎ করে এই ধরনের পোশাক ফতোয়া জারি করল রাজপুর সোনারপুর পুরসভার আধিকারিকরা। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন- পুজোর আগেই উদ্বেগ বাড়িয়ে ডেল্টা প্লাসের খোঁজ মিলল বাংলায়, আক্রান্ত ২
এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "টিকা নিতে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনও ড্রেসকোড আছে কিনা আমার জানা নেই। টিকা দেবেন না ঠিক আছে। কিন্তু, হাফপ্যান্ট পরলে টিকা দেবেন না এটা কোনও আইন হতে পারে! আসলে হয়তো কাটমানি ঠিক মতো পায়নি।"