কন্যাশ্রী,সুবজ সাথীর মতো সামাজিক প্রকল্প নিয়ে আসার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল গ্রামবাংলায় মেয়েদের আরও স্কুলমুখী করা। মেয়েকে বোঝা না মনে করে বাবা মায়েরা যাতে তাদেরও উচ্চশিক্ষিত করার ব্যবস্থা করেন, সে কথা মাথায় রেখেই চালু হয় কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প।
কন্যাশ্রীর মতো সফল প্রকল্পের ফল মিলল হাতে নাতে। সীমান্ত লাগোয়া জেলা মুর্শিদাবাদে পর পর দু'বার নজির তৈরি করে মাদ্রাসা বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ছাত্রদের থেকে অনেক বেশি সংখ্যক ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছে। সীমান্তের চোরাচালান আর মাদক পাচারের পরিবেশে বড় হয়ে উঠেও যে সমান তালে লক্ষ্যে অবিচলিত থাকা যায় তাঁর প্রমাণ দিয়েছে ওই ছাত্রীরা। ইসলামপুর,দৌলতাবাদ, লালগোলা,ভগবানগোলা, রানিতলা, বেলডাঙ্গা, হরিহরপাড়া, রেজিনগর,শক্তিপুর,বহরমপুর সহ এখানকার সব সীমান্ত এলাকায় রেকর্ড সংখ্যক ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলায় মাদ্রাসার দশম শ্রেণিতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৬২৯ জন। তার মধ্যে ১১,৯৬৭ জন পরীক্ষার্থী ছাত্রী। তুলনায় মাত্র ৪,৬৬২ জন ছাত্র পরীক্ষা দিচ্ছে। শতাংশের হিসেবে ৭১.৯৬ শতাংশ পরীক্ষার্থী মেয়ে ও ৩১.০৪ শতাংশ ছেলে পরীক্ষার্থী। গত বছরের তুলনায় এ বার ২ শতাংশ বেশি ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছে। জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, 'মাদ্রাসা পরীক্ষার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গত বছরের মতো এ বছর মাদ্রাসা পরীক্ষায় মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে।’
অথচ মাত্র কয়েক বছরের তুলনায় এই বছর এক ধাক্কায় ছাত্রী সংখ্যায় বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ হাজারের কাছাকাছি। যা যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ প্রশাসনের কাছে। মোট ৩১টি পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই পরীক্ষা। নির্বিঘ্নে এই পরীক্ষা চালাতে প্রতিটি কেন্দ্রের একশো মিটারের মধ্যে চালু থাকছে ১৪৪ ধারা,থাকছে সিসিটিভি মতন নজরদারির ব্যবস্থাও। এই বিষয়ে লালগোলার আইসি আর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আবদুর রউফ বুধবার বলেন, 'এতদিন সচরাচর গ্রামের দিকে ছেলেরা বেশি করে পড়াশোনা করতে এগিয়ে আসত,আজ সেখানে উল্টটাই হচ্ছে। এখন পরিসংখ্যান বলছে সীমান্ত এলাকায় ছোট ছোট মেয়েরা ছেলেদের টেক্কা দিতে ,জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে বেশি করে সামনে আসছে। আশা করি মুর্শিদাবাদে সংখ্যাটা আগামী দিনে আরও বৃদ্ধি পাবে।'