কুপুত্র যদি বা হয়, কুমাতা কদাপি নয়’, কার্যত এই প্রবাদ যেন প্রশ্নচিহ্নের মুখে এসে দাঁড়াল রবিবার। শেষ পর্যন্ত নিজের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে পথের 'কাঁটা' তরতাজা যুবককে পরিকল্পনা করে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলেন খোদ মা। আটক করা হল তাকে।
মুর্শিদাবাদের এই ঘটনায় চক্ষুচড়কগাছ প্রতিবেশিদের। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই গ্রামে বিবাহবর্হিভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এক গৃহবধূ বলে অভিযোগ। অভিযোগ, সেক্ষেত্রে নাকি পথের 'কাঁটা' হয়ে দাঁড়াচ্ছিল খোদ তার নিজের সন্তান! আর তার জেরেই নিজের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ছেলেকে চক্রান্ত করে শ্বাসরোধ করে খুন করল মা।
এই ঘটনায় রবিবার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো মুর্শিদাবাদের কান্দির রুদ্রবাটি এলাকায়। মৃত ছেলের নাম দীনবন্ধু ঘোষ (২২)। এদিন রুদ্রবাটি এলাকায় নিজের ঘর থেকে দীনবন্ধু ঘোষের দেহ উদ্ধার হয়। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে স্থানীয়রা ছুটে এলে মৃতদেহ উদ্ধারের পর মৃতের মা অভিযুক্ত ভানুমতি ঘোষকে আটকে রাখে প্রতিবেশীরা। পুলিশ অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভানুমতীর স্বামী সন্দীপ ঘোষের মৃত্যু হয় প্রায় বছর আড়াই আগে। তার পর থেকেই তিনি বিবাহবর্হিভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে স্থানীয়রা জানায়। একাধিক বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন ভানুমতী। কাজের জায়গায় অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বলেই অভিযোগ। এ নিয়ে পাড়ার বাসিন্দারা প্রায়শই আলোচনা করতেন। স্বাভাবিকভাবেই তা ছেলে দীনবন্ধুর কানেও পৌঁছায়। নিত্যদিনই বাড়িতে অশান্তি লেগে থাকত। মায়ের এমন বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে বারবার সতর্ক করেছিলেন দীনবন্ধু। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি বলেই এলাকাবাসী জানান।
এরইমধ্যে মাস ছয়েক আগে পেশায় রাজমিস্ত্রি দীনবন্ধুর বিয়ে হয়। প্রতিবেশীরা জানান, বিয়ের পর থেকেই ছেলে ও তার স্ত্রীর সঙ্গে ভানুমতির অশান্তি আরোও বেড়ে যায়।সম্প্রতি মাস চারেক ধরে দীনবন্ধুকে ছেড়ে তার স্ত্রী বাপের বাড়িতেই রয়েছেন। এরই মধ্যে এদিন নিজের ঘরে গলায় ফাঁস অবস্থায় দীনবন্ধুকে দেখা যায়। তারপরে পড়শীরা ছুটে এসে দেহ উদ্ধার করে। কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দীনবন্ধুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মায়ের বিবাহবর্হিভূত সম্পর্কের বিপক্ষে ছিলেন ছেলে। নিজের পথের 'কাঁটা' সরাতেই ছেলেকে খুন করেছেন মা ভানুমতী বলে অভিযোগ। এমন ঘটনায় রীতিমতো হতভম্ব পাড়া প্রতিবেশীরা।