মাল নদীর হড়পা বানে মানুষের মৃত্যু নিয়ে এবার মুখ খুললেন জলপাইগুড়ির জেলা শাসক

এবিষয়ে শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু এক সাংবাদিক সম্মেলন করে সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে জানান,  ‘বিভিন্ন মহল থেকে ওঠা অভিযোগের তদন্ত হবে’।

জলপাইগুড়ির মালবাজারে নদীর হড়পা বানে প্রতিমা বিসর্জন দিতে আসা মানুষের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে। প্রশাসনিক গাফিলতি নিয়েও হয়েছে বিস্তর আলোচনা। গত দু’দিন ধরে এবিষয়ে কার্যত মুখ না খুললেও শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে এবিষয়ে কথা বললেন জলপাইগুড়ি জেলার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু।

নবান্ন সূত্রে জানা গেছিল, বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে এই ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছেন। জেলাশাসকের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। জেলার বিসর্জনের ঘাটগুলির পরিকাঠামো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথ মানের রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখারও নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব। জেলা প্রশাসনের তরফে নবান্নকে দেওয়া প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, মাল এলাকায় কোনও বৃষ্টি হয়নি, তবে মাল নদীতে হড়পা বান হয়েছে। ভুটান থেকে যে জলপ্রবাহ আসে, তাতেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নদীর জল তিন গুণ বেড়ে যায়। তাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। যদিও সেই বিষয়ে প্রথম থেকে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেনি জেলা প্রশাসন। 

Latest Videos

কিন্তু, কিছু প্রশ্ন থেকেই গিয়েছিল, যেমন, মহালয়ার আগের দিনই হড়পা বান এসেছিল মাল নদীতে, সেই বানের জলের তোড় ভাসিয়ে নিয়ে গেছে অস্থায়ী বাঁধ। খড়কুটোর মতো ভেসে চলে গেছে বাঁধ তৈরির কাজে পাথর তোলার জন্য নদীখাতে নামা একটা বিশাল ট্রাক। তাহলে, এত কিছু জেনেও, সেই জায়গাতেই প্রশাসন আবার কেন বাঁধ তৈরি করল? কেন এত দর্শনার্থী এবং প্রতিমাবাহী লরিকে সেই জায়গাতেই নদীর মাঝের চরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হল? প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা আর সচেতনতা দেখা গেল না কেন? দ্বিতীয়ত, মালবাজারে নবমীর দিনও বৃষ্টি হয়েছে। উত্তরবঙ্গে নিয়মিত বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। তাহলে কি প্রশাসন সেই পূর্বাভাসে কান দেয়নি? তৃতীয়ত, মাল নদীর ঘাট তৈরির দায়িত্বে ছিল মাল পুরসভাও, দিনভর ঘাট তৈরির কাজ করেছিলেন পুরকর্মীরা। নবমীর দিন প্রচণ্ড বৃষ্টিতে নদীর জল বেড়ে গিয়েছিল। তখনও কেন এড়িয়ে গিয়েছিলেন পুরকর্তারা?


এবিষয়ে শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু এক সাংবাদিক সম্মেলন করে সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে জানান,   ‘বিভিন্ন মহল থেকে ওঠা অভিযোগের তদন্ত হবে, তখন যেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো সেটাই ঠিক, আগামীতে আরো সতর্কতা গ্রহণ করা হবে’। 

গত বুধবার মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের সময় আসা হড়পা বানের কারণে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, এখন পর্যন্ত তাতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, এবং আহত অবস্থায় যে ১৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যেও অনেককে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সেই দিনের ঘটনা থেকে অনেক কিছুই নতুন করে ভাবতে হবে আগামীতে বলেও জানান জেলা শাসক। বিভিন্ন মহল থেকে মাল নদীতে হড়পা বান আসার বিষয়ে এবং এত বড় ঘটনা ঘটার পেছনে যে সব অভিযোগ উঠছে, সেই প্রশ্নগুলোকেও ক্ষতিয়ে দেখা হবে বলে জানান জেলা শাসক। এছাড়াও ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার দারা ঘোষিত ক্ষতি পূরণের অর্থ প্রাপ্যকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন-
ষাটোর্ধ হয়েও ঢাকের তালে জমিয়ে ভাসান নাচ! রাইমাকে নিয়ে ‘বিজয়া’ জমিয়ে দিলেন লাস্যময়ী মুনমুন সেন
গরু পাচারকাণ্ডে আরও ফাঁপরে অনুব্রত মণ্ডল, সিবিআইয়ের ৩৫ পাতার চার্জশিটে ৫৩টি সম্পত্তির উল্লেখ
মহালয়ার আগেও এসেছিল হড়পা বান, জল বেড়েছিল নবমীতেও, প্রশ্নের মুখে মালবাজারের প্রশাসনিক তৎপরতা 

Share this article
click me!

Latest Videos

PM Modi Live: নিখিল কামথের মুখোমুখি প্রধানমন্ত্রী, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
Suvendu Adhikari : 'হিন্দুদের মধ্যেই ভেদাভেদের কারণে হিন্দু আজ সঙ্কটে', মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর
'আমাদের আনুন আমরা ৩ লাখের ঘর ও ৩ হাজার টাকা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেবো', বার্তা দিলেন Suvendu Adhikari
Suvendu Adhikari Live : আসানসোলে মেগা জনসভা শুভেন্দুর, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘Trinamool Bangladeshi-দের সুবিধা করে দিচ্ছে’ বিস্ফোরক মন্তব্য Dilip Ghosh-এর, দেখুন