সিরাজের হাত ধরেই ষষ্ঠীর বোধনে উমা এলেন নবপল্লির দুর্গামন্দিরে

  • দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করলেন মুসলিম ব্যবসায়ী
  • পুজোর জন্য জায়গা ছেড়ে দেন তিনি
  • তৈরি করে দেন দুর্গামণ্ডপও
  • বীরভূম জেলার রামপুরহাটের ঘটনা

debamoy ghosh | Published : Oct 4, 2019 12:36 PM IST

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট: ষষ্ঠীর বোধনেই মহম্মদ সিরাজউদ্দিনের হাত দিয়ে উদ্বোধন হল দুর্গা মন্দিরের। এমনই সম্প্রীতির নিদর্শন পাওয়া গেল বীরভূমের রামপুরহাট পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভাঁড়শালা পাড়ার নবপল্লিতে।

৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট শহরের শেষ প্রান্তে ২০০০ সালের বন্যার পর থেকে আশেপাশের গ্রামের মানুষ বাটাইল মৌজায় বাড়ি করতে শুরু করে। ওই এলাকা কিছুটা রামপুরহাট পুরসভা এবং কিছুটা দখলবাটি পঞ্চায়েতের মধ্যে রয়েছে। ধীরে ধীরে এলাকায় বসতি বাড়তে শুরু করায় সেখানে দুর্গা পুজো করার  সিদ্ধান্ত নেন কয়েকজন যুবক। সেই মতো জাতীয় সড়কের ধারে একটি ফাঁকা জায়গায় ২০০৫ সালে পুজো শুরু করা হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে ওই এলাকায় বসতি গড়ে ওঠায় পুজোর স্থান পরিবর্তন হয়েছে বার বার।

শেষে জাতীয় সড়ক লাগোয়া ফাঁকা জায়গায় পুজো বেশ কয়েকবছর চলে। কিন্তু সেই জায়গাতেও বহুতল আবাসন তৈরি হতে শুরু হওয়ায় পুজো উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত পরে যায়। কিন্তু সব সমস্যার সমাধান করেন জমি বাড়ি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মহম্মদ সিরাজউদ্দিন। তিনিই ওই এলাকায় একটি বহুতল আবাসন গড়ছেন। পুজো উদ্যোক্তাদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে আবাসনের এক পাশে পুজোর জন্য জায়গা ছেড়ে দেন সিরাজউদ্দিন। শুধু জায়গা দিয়েই দায় সারেননি। আড়াই শো বর্গফুট জায়গার উপরে নির্মাণ করে দিয়েছেন দুর্গা মন্দির। 

পুজো উদ্যোক্তাদের আবেদনে এ দিন সেই দুর্গা মন্দিরেরই উদ্বোধন করেন সিরাজউদ্দিন। পুজো কমিটির সম্পাদক সাধন দাস বলেন, 'এলাকায় দিন দিন নতুন নতুন বসতি গড়ে উঠছে। সবার আর্থিক সাহায্যে পুজো হয়ে আসছে। কিন্তু জায়গার অভাবে দিন দিন পুজো করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। চেষ্টা করেও জায়গা কেনার সামর্থ্য হয়ে ওঠেনি। মহম্মদ সিরা উদ্দিন না থাকলে হয়তো পুজো বন্ধ করে দিতে হতো।'

পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ সৌমেন দত্ত বলেন, 'দুর্গা পুজো বাঙালির বড় উৎসব। এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। মহম্মদ সিরাজউদ্দিন জায়গা দিয়ে মন্দির গড়ে দিয়ে তারই নিদর্শন রাখলেন।' আর সিরাজউদ্দিন নামে ওই ব্যবসায়ী নিজে বলেন,'দুর্গা পুজো বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব। তাই এলাকার উৎসবের আনন্দে যাতে ভাঁটা না পরে, তার জন্য আমি আবাসনের জায়গা বাঁচিয়ে দুর্গা মন্দির গড়ে দিয়েছি। এটাই তো মানুষের ধর্ম। আমি শুধু মানব ধর্ম পালন করেছি মাত্র।'

Share this article
click me!