এক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে করোনা মুক্ত উদয়নারায়ণপুরে নতুন করে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিল, আতঙ্কিত উদয়নারায়ণপুরবাসী। ৫৬ বছরের খিলার গৌরাঙ্গচকের এক গ্রামীণ চিকিৎসক উদয়নারায়ণপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যান। শনিবার ওই ব্যাক্তির করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। শিবপুরের শ্মশানে করোনা প্রটোকল মেনে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ সৎকার করা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতাল থেকে উদয়নারায়ণপুর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয় ওই ব্যক্তিকে। অনুমান, সেখানেই সংক্রমিত হন তিনি। অভিযোগ, মৃতের পরিবারের সদস্য পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হওয়ায় প্রভাব খাটিয়েই ভর্তি করা হয় উদয়নারায়ণপুর হাসপাতালে। এই ঘটনার ফলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা দিয়েছে সারা উদয়নারায়ণপুরে।
জানা গিয়েছে, দিন কুড়ি আগে উদয়নারায়ণপুরের জয়নগর ব্রিজে বাইক দুর্ঘটনায় আহত হয় স্বপন পন্ডিত। কোমরের শিরদাঁড়ায় গুরুতর আহত হন তিনি। তাঁকে কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের লোকজন। ভর্তি হওয়ার আগে তাঁর করোনার পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। সেখানে তিনি প্রায় দিন দশেক চিকিৎসাধীন থাকেন। পরে তাঁকে উদয়নারায়ণপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি থাকাকালীন মঙ্গলবার তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। করোনা পরীক্ষা রিপোর্ট আসার আগেই শুক্রবার সন্ধ্যায় উদয়নারায়ণপুর হাসপাতালে ওই ব্যক্তি মারা যান। শনিবার বিকালে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরে তাঁর মৃতদেহ শিবপুর শ্মশানে করোনা প্রটোকল মেনে দাহ করা হয়।
উদয়নারায়ণপুরবাসী প্রশ্ন তুলছেন, কেন করোনার কোনও নিয়ম না মেনেই ওই ব্যক্তিকে পিয়ারলেস হাসপাতাল থেকে উদয়নারায়ণপুর হাসপাতালে আনা হল? যখন সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে নিয়মের এতো কড়াকড়ি, তখন কেন এক্ষেত্রে কোনও নিয়ম মানা হল না? উদয়নারায়ণপুরে কোনও সংক্রমণ ছিল না। ওই ব্যক্তি করোনায় মারা যাওয়ার ফলে উদয়নারায়ণপুরে সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি করা হলো প্রশাসনিক ব্যর্থতায়।
অন্যদিকে, শনিবার সকাল থেকেই ওই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর চাউর হতেই গোটা উদয়নারায়ণপুর এলাকা শুনশান হয়ে যায়। বাজারহাট, দোকানপাট প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। উদয়নারায়ণপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভয়ে কোনও রোগীকে আসতে দেখা যায়নি। যাঁরা ছিলেন অনেকেই ছুটি করিয়ে নিয়ে চলে যায়। সব মিলিয়ে একটা আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
উদয়নারায়ণপুরের বিডিও রামজীবন হাঁসদা জানিয়েছেন, কি আর করা যাবে! আমাদের প্রায় দেড়মাসের পরিশ্রম জলে চলে গেল। অনেক কষ্ট করেই করোনামুক্ত রেখে ছিলাম উদয়নারায়নপুর ব্লক। করোনায় মৃত্যুর কারণে খিলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা কন্টেইমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রস্তুতি চলছে। মৃত ব্য়ক্তির পরিবারের ১৮জনকে খিলাতেই কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।