বাবা মা আদর করে নাম রেখেছিলেন জলি । হাসি-খুশি শিশুর তো ওই নামটা ছাড়া আর কোনও নাম মনে আসেনি তাঁদের । কিন্তু তাঁরা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি সেই মেয়ের জীবনে একদিন মহা বিপর্যয় নেমে আসবে ।
তখন কতই বা বয়স ? ১২ কি ১৩ । ক্লাস সেভেনের ছাত্রী জলির হঠাৎ জ্বর হয় । অজানা জ্বরের প্রকোপে জীবন-মরণ সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় তাঁর কাছে। তাকে নিয়ে যেতে হয় চেন্নাই । দীর্ঘ চিকিৎসার পর জলি সুস্থ হয় বটে, কিন্তু অসুস্থতা দুটি পা' ই অকেজো করে দেয় তার। যায় ফলে হুইল চেয়ার হয়ে যায় নিত্যসঙ্গী । কিন্তু জলি জীবন যুদ্ধে হার মানেনি । সেই বালিকা আজ হয়ে উঠেছেন প্রতিবন্ধীদের মধ্যে এক আইকন ।
চুচূড়া ঘুঁটিয়াবাজার এলাকার জলিকে সেখানকার বাসিন্দারা আজ দিদিমণি নামে একডাকে চেনে । ৪০ বছর বয়সী জলি ভট্টাচার্য্য আজ চুচূড়া পিপুলপাতির জ্ঞানাঞ্জন জুনিয়র বেসিক স্কুলের শিক্ষিকা । বাড়ি থেকে ১৫ মিনিটের পথ তিনি হুইল চেয়ার করে করেই স্কুলে যান । আর এই স্কুল কোনও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের জন্য নয়। এই স্কুল সর্বসাধারণের জন্য । সেখানে অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে তিনি তাল মিলিয়ে ক্লাস করান। তাই তো ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দীপ্তি দাস বিশ্বাস বলেন, আমরা বুঝতেই পারি না যে জলির প্রতিবন্ধকতা আছে।
পড়ানোর গুণে সমস্ত ছাত্রদের কাছে আজ অতি প্রিয় নামে জলি দিদিমণি । জীবনযুদ্ধের সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে ফু দিয়ে উড়িয়ে অন্য়ান্যদের সঙ্গে জীবনের পাঞ্জা কষে চলেছেন তিনি। বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে এরকম শিক্ষিকাকে কুর্নিস জানাতেই হয়।