রাজ্যপালের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে তৃণমূল, সংযত হওয়ার 'পরামর্শ' দিলেন পার্থ

  • রাজ্যপালের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস
  • আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন জগদীপ ধনখড়
  • রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই মন্তব্য, অভিযোগ পার্থর
  • সংযত হওয়ার পরামর্শ দিলেন তৃণমূল মহাসচিব
     

debamoy ghosh | Published : Oct 11, 2019 3:47 AM IST / Updated: Oct 11 2019, 11:32 AM IST

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে গেল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কোনও রাখঢাক না করেই রাজ্যপালকে সংযত হওয়ার পরামর্শ দিলেন তৃণমূল মহাসচিব এবং রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যপালের মন্তব্য অসত্য এবং রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক বলেই মনে করছে রাজ্যের শাসক দল। 

দশমীর দিন মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, আট বছরের ছেলে- সহ এক স্কুল শিক্ষকের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বৃহস্পতিবার উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এই ঘটনাকে তুলে ধরে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাজ্যপালকে জবাব দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। 

আরও পড়ুন- বাড়িতেই নৃশংস হত্যাকাণ্ড, মুর্শিদাবাদে অন্তসত্ত্বা স্ত্রী, পুত্র-সহ 'খুন' স্কুল শিক্ষক

আরও পড়ুন- ... মুর্শিদাবাদের শিক্ষক পরিবার হত্যায় সবাই চুপ কেন, প্রশ্ন রাজ্যপালের

রাজ্যপালের বক্তব্য অসত্য এবং অভিসন্ধিমূলক বলে দাবি করে বৃহস্পতিবার রাতে পাসাংবিধানিক সীমারেখা লঙ্ঘন করছেন। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তাঁর মন্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অভিসন্ধিমূলক। যখন শান্তি, সম্প্রীতি এবং সৌভ্রাতৃত্বের মধ্যে দিয়ে এ রাজ্যে শারদ উৎসব নির্বিঘ্নে পালিত হয়, তখন রাজ্যপাল সেটা দেখতে পান না। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ত্রিপুরাতে প্রতিদিন যে অরাজকতা চলছে, তার থেকে রাজনৈতিক ভাবে মুখ ঘোরাতেই তাঁর এই অসত্য বক্তব্য। আমরা তাঁকে বলতে চাই, তিনি যেন নিজেকে সংযত রেখে নিজের সীমা লঙ্ঘন না করেন।'

মুর্শিদাবাদের স্কুল শিক্ষক এবং তাঁর পরিবারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নেহাতই পারিবারিক বিবাদ নাকি অন্য কোনও প্রতিহিংসার জের, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পুলিশ। জেলা পুলিশের তরফে অবশ্য বৃহস্পতিবারই দাবি করা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। যদিও রাজ্যপালের মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রাজনীতিকে জড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল মহাসচিবও। রাজ্যপালের করা মন্তব্য নিয়ে তৃণমূল মহাসচিব বলেন, 'মুর্শিদাবাদের একটি পারিবারিক ঘটনা নিয়ে এত অপপ্রচার কেন? যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ধামাচাপা দিতেই রাজ্যপালকে মঞ্চে নামানো হয়েছে। এটা বাংলার মানুষ কখনওই মেনে নেবেন না। রাজ্যপালকে বলব তাঁর সাংবিধানিক সীমারেখা যেন লঙ্ঘন না করেন।' 

জগদীপ ধনখড়ের পূর্বসূরী কেশরীনাথ ত্রিপাঠীও এর আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে শাসক দলের রোষের মুখে পড়েছিলেন। বর্তমান রাজ্য়পাল জগদীপ ধনখড় এর আগে ভাটপাড়ায় সাংসদ অর্জুন সিংয়ের উপর হামলার ঘটনাতেও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। রাজ্যপালের এই অতিসক্রিয়তা মোটেই ভালভাবে দেখছে না শাসক দল। সেই মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়ে পার্থবাবু বলেন, 'অন্তত তিন বার দেখলাম তিনি যে ধরনের মন্তব্য করছেন তাতে মনে হচ্ছে তিনি সাংবিধানিক পদ ভুলে গিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের মতো মন্তব্য় করছেন। বাংলার মানুষ তাঁর অভিসন্ধি বুঝতে পারছে।'

রাজ্যপালের সঙ্গে শাসক দলের এই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের আবহের মধ্যেই শুক্রবার রেড রোডে দুর্গা পুজোর বিসর্জন কার্নিভালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একই মঞ্চে হাজির থাকার কথা জগদীপ ধনখড়ের। রাজ্যপাল সেখানে উপস্থিত থাকলেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর 'সৌজন্য' কতটা বজায় থাকে, সেটাই এখন দেখার। 

Share this article
click me!