পাঁচ দিনের যাবতীয় লড়াই শেষ। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুই হল গণধর্ষণের শিকার হওয়া কোলাঘাটের দশম শ্রেণির ছাত্রীর। ছাত্রীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিজেপি। রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ।
গত শনিবার গণধর্ষণের শিকার হয় কোলাঘাট থানার যোগীবের গ্রামের বাসিন্দা দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী। বাগডিহা গ্রামে পাঁচজন মিলে তার উপরে নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় কোনওক্রমে বাড়ি ফিরেই কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই কিশোরী।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে নির্যাতিতাকে মেচেদার একটি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। শুক্রবার সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হল বিশ্বজিৎ পাত্র,সমীর মণ্ডল এবং সৌরভ দুলুই। ধৃতদের মধ্যে একজন নাবালকও রয়েছে। ধৃতদের ছ' দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। অভিযুক্ত নাবালককে হোমে পাঠানো হয়েছে। এখনও পলাতক রয়েছে এক অভিযুক্ত। এ ছাড়াও ওই কিশোরীর প্রেমিককেও জিজ্ঞাসাবাদের করছে পুলিশ। ঘটনার সময় ওই কিশোরীর সঙ্গেই ঘুরতে বেরিয়েছিল নাবালিকা। যদিও নির্যাতিতার প্রেমিক এই ঘটনায় জড়িত কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন- অন্তঃসত্ত্বা বান্ধবীকে গণধর্ষণ, লজ্জায় আত্মঘাতী প্রেমিক, নৃশংসতা উদয়পুরে
কিশোরীর মৃত্যুর খবর আসতেই ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিজেপি। ঘটনাস্থলে যান বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষও। তিনি বলেন, 'এটা চরম লজ্জার ঘটনা। সিআডি রাজনৈতিক নেতাদের পিছনে দৌড়াদৌড়ি করতে পারে। কিন্তু এখানে এসে তদন্ত করে কি সাত দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া যায় না? ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে এই মামলার বিচার করতে হবে। সাত দিনের মধ্যে এই মামলায় চার্জশিট দেওয়া না হয়ে আমরা বড় আন্দোলনে নামব। এখানে তৃণমূল নেতারা উল্টে টাকা দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। বাংলাকে ছারখার করে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। প্রশাসন মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রশাসন প্রণাম করছে, অথচ মেয়েদের নিরাপত্তা নেই।' পাঁশকুড়া পূর্বের সিপিএম বিধায়ক ইব্রাহিম আলিরও অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুখদেব প্রামাণিক দু' লক্ষ টাকার বিনিময়ে নির্যাতিতার পরিবারকে পুলিশে অভিযোগ না জানানোর জন্য বলেছিলেন। এ বিষয়ে এখনও তৃণমূল নেতৃত্বের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া সম্ভব হয়নি।