বেহুঁশ করে প্রবল আক্রোশে হত্যা, নেপথ্যে পরিচিতই, মুর্শিদাবাদে নিশ্চিত পুলিশ

  • মুর্শিদাবাদে শিক্ষক হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্য
  • পরিচিত কারও  হাতই দেখছেন তদন্তকারীরা
  • খুনের আগে বেহুঁশ করা হয় শিক্ষক এবং তাঁর পরিবারকে
     

debamoy ghosh | Published : Oct 11, 2019 9:18 AM IST

মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে স্কুল শিক্ষক হত্যার নেপথ্যে যে পরিচিত কেউই রয়েছে, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর সেবিষয়ে নিঃসংশয় তদন্তকারীরা। কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, হত্যার আগে সম্ভবত নিহত স্কুল শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল এবং তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে বেহুঁশ করে ফেলা হয়েছিল। 

মুর্শিদাবাদ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তন্ময় সরকার বলেন, 'যে বা যারা এই বীভৎস ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা সম্ভবত ওই পরিবারের খুবই পরিচিত।শুধু তাই নয়,ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে অনুযায়ী,মৃতরা কেউ খুনের সময় কোনও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি। সম্ভবত তাঁদের খাবারের সঙ্গে মাদক বা ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাঁদের আগে থেকেই নিস্তেজ করে দেওয়া হয়েছিল।' পরিচিত কেউ ছাড়া যে এভাবে খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়, সে বিষয়ে নিশ্চিত পুলিশকর্তারাও। যেভাবে গলার নলি কেটে প্রত্যেককে হত্যা করা হয়েছে, তাতে প্রবল আক্রোশ থেকেই বন্ধুপ্রকাশবাবু ও তাঁর পরিবারকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। 

আরও পড়ুন- মিলল স্ত্রীর লেখা ডায়েরি, মুর্শিদাবাদ হত্যাকাণ্ডে রাজনীতির যোগ মানতে নারাজ পুলিশ

আরও পড়ুন- মুর্শিদাবাদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরব অপর্ণা, রাজধর্ম মনে করালেন মুখ্যমন্ত্রীকে

ঘটনার দিন এক দুধওয়ালা প্রথম ওই স্কুল শিক্ষকের দেহ দেখতে পান বলে জানা গিয়েছে। রাজীব দাস নামে ওই দুধওয়ালার দাবি, চিৎকার করতেই ঘরের মধ্যে থেকে কালো গেঞ্জি এবং প্যান্ট পরিহিত এক ব্যক্তি পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। ওই দুধওয়ালাকেও জেরা করছে পুলিশ। 

পুলিশকর্তাদের অবশ্য আশা, খুব শিগগিরই খুনের সঙ্গে জড়িতদের ধরা সম্ভব হবে। নিহত বন্ধুপ্রকাশবাবু এবং তাঁর স্ত্রীর মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখেও বেশ কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। ঘটনার আগের দিন অপরিচিত দুই যুবককে বাইকে চড়ে লেবুবাগান এলাকায় বন্ধুপ্রকাশবাবুর আশপাশে ঘুরতে দেখেছিলেন স্থানীয়রা। ওই দুই যুবক সম্ভবত হত্যাকাণ্ডের আগে এলাকায় রেইকি করতে এসেছিল বলেই ধারণা তদন্তকারীদের। 

ময়নাতদন্তের পরে নিহত বন্ধুপ্রকাশ পালের সাগরদিঘির বাড়িতে দেহগুলি নিয়ে যাওয়া হয়। বীরভূমেরর রামপুরহাটে বিউটিদেবীর বাড়িতেও তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এর পর মুর্শিদাবাদের হরিদাস মাটি শ্মশান ঘটে দাহ করা হয় পাল দম্পতিকে। তাঁদের নাবালক ও গর্ভজাত সন্তানকে আজিমগঞ্জে সমাহিত করা হয়।

মৃত শিক্ষকের  মাসতুতো ভাই বন্ধুকৃষ্ণ ঘোষ বলেন, 'আমার কেউ কোনওভাবেই এই ঘটনা এখনও বিশ্বাসই করতে পারছি না। নৃসংশ এই খুনের চরম শাস্তি হওয়া দরকার। সমাজে আইনের শাসন তাহলেই প্রতিষ্ঠিত হবে,নচেৎ নয়।'

Share this article
click me!