মিলল স্ত্রীর লেখা ডায়েরি, মুর্শিদাবাদ হত্যাকাণ্ডে রাজনীতির যোগ মানতে নারাজ পুলিশ

  • মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে সপরিবার খুন স্কুল শিক্ষক
  • হত্যাকাণ্ড ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি
  • নিহত শিক্ষক আরএসএস কর্মী বলে দাবি 
  • খুনের পিছনে রাজনৈতিক যোগ মানতে নারাজ পুলিশ
     

debamoy ghosh | Published : Oct 11, 2019 8:53 AM IST / Updated: Oct 11 2019, 03:52 PM IST

রাজনৈতিক কোনও কারণ নয়। বরং মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে স্কুল শিক্ষকের পরিবারের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অন্যান্য একাধিক সম্ভাব্য কারণ খুঁজে পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু তার মধ্যে ঠিক কোন কারণে স্কুল শিক্ষক বা তাঁর পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হল, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারেই জেলা পুলিশের কর্তারা। ফলে ঘটনার পরে বাহাত্তর ঘণ্টা কেটে গেলেও জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে সূত্র হাতড়ে বেড়াচ্ছে পুলিশ। গ্রেফতারি দূরে থাক, আটকও করা যায়নি কাউকে। 

জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। নিহত স্কুল শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছেন স্থানীয় আরএসএস এবং বিজেপি নেতারা। এর পরেই বিষয়টিতে রাজনৈতিক রং লেগেছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী কেন চুপ, সেই প্রশ্ন তুলে টুইট করেছেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। বাংলায় তালিবানি শাসন চলছে বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামার জন্য সংঘ প্রধান মোহন ভগবৎ এ রাজ্যের নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলেও খবর। 

বিজেপি বা আরএসএস যাই বলুক না কেন, বৃহস্পতিবারই এই হত্যাকাণ্ডে রাজনীতির যোগ খারিজ করে দিয়েছিল পুলিশ। বরং তদন্তে নেমে হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য আরও বেশ কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন জেলা পুলিশের কর্তারা। প্রথমত, ঘটনার পর শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের বাড়ি থেকেই তাঁর স্ত্রী বিউটি পালের লেখা একটি নোট ও ডায়েরি পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেখানে স্বামীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের টানাপোড়েনের কথা লেখা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। যদিও ওই হাতের লেখা সত্যিই বিউটিদেবীর কি না, নাকি ঘটনার মোড় ঘোরাতে অন্য কেউ ওই নোট লিখেছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। 

আরও পড়ুন- মুর্শিদাবাদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরব অপর্ণা, রাজধর্ম মনে করালেন মুখ্যমন্ত্রীকে

আরও পড়ুন- আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিঁধলেন রাজ্যপাল, পাল্টা দিলেন পার্থ, দেখুন ভিডিও

জিয়াগঞ্জ- আজিমগঞ্জ পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভাগীরথী এলাকায় বছর আড়াই আগে বাড়ি করেছিলেন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশবাবু। তাঁর আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদেরই সাগরদিঘির সাহাপুর গ্রামে। সেখানে তাঁর মা থাকেন। 


তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাবার দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান ছিলেন বন্ধুপ্রকাশবাবু। সেক্ষেত্রে প্রথম পক্ষের ভাই বোনদের সঙ্গে সম্পত্তির বিবাদ ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আবার শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে এলআইসি এজেন্ট হিসেবেও তিনি কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। সাগরদিঘিতে নিজের আদি বাড়ির এলাকায় পুরনো কোনও আর্থিক লেনদেনের ঘটনা এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। সেই কারণে সাগরদিঘিতে নিহত স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে গিয়েও তদন্ত করছে পুলিশ। 

মুর্শিদাবাদ জেলা বিজেপি-র সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ  বলেন,'ব্লু প্রিন্ট বানিয়ে ওই আরএসএস কর্মীর পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ৭২ঘণ্টা অতিবাহিত হয়ে গেলেও পুলিশ এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আমরা এবার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে জেলা জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছি।' তৃণমুলের লালবাগ মহকুমা সভাপতি রাজীব হোসেনের পাল্টা দাবি,'এই জঘন্য খুন কোনওভাবেই মানা যায়না, দোষীদের অবিলম্বে শাস্তি হওয়া দরকার। তবে বিজেপি এই নিয়ে যে রাজনীতি করছে তার তীব্র নিন্দা করছি আমরা।'

Share this article
click me!