প্রতিবাদের নামে তাণ্ডবের জের। পাঁচদিন পরেও স্বাভাবিক হল না রেল চলাচল। যার জেরে এ দিনও শিয়াসদহ এবং হাওড়া থেকে একাধিক ট্রেন বাতিল করেছে পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেল। তার মধ্যে অসম এবং উত্তরবঙ্গের ট্রেন যেমন রয়েছে, সেরকমই দক্ষিণ ভারতে যাওয়ার বহু ট্রেনও বাতিল করা হয়েছে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের মতো কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক মঙ্গলবার সকাল দশটা পর্যন্ত হাওড়া এবং শালিমার থেকে কোন কোন ট্রেন বাতিল হয়েছে-
এর পাশাপাশি শিয়ালদহ থেকে উত্তরবঙ্গগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস মালদহ টাউন স্টেশন পর্যন্ত যাবে। শিয়ালদহ জঙ্গিপুর ডেমু ট্রেনটি কাটোয়া পর্যন্ত চালানো হবে বলে পূর্ব রেল সূত্রে খবর।
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, উত্তরবঙ্গ, উত্তর- পূর্ব ভারতের দিকের ট্রেনগুলি বাতিল করতে হচ্ছে কারণ মালদহের পর থেকে রেলের সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে। সেই ক্ষয়ক্ষতি মেরামত না করা পর্যন্ত ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। অন্যদিকে একইভাবে শিয়ালদহ খড়্গপুর শাখাতেও রেল লাইন, সিগন্যাল রুম- সহ প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। যে কারণে দক্ষিণ ভারতগামী একাধিক ট্রেন বাতিল হচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে। এর ফলে দক্ষিণ ভারতগামী প্রচুর রোগী এবং তাঁদের পরিবার সমস্যার মুখে পড়েছে।
পূর্ব এবং দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে চলা বিক্ষোভে প্রাথমিকভাবে রেলের প্রায় তিনশো কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ট্রেন, স্টেশন ভাঙচুর করার পাশাপাশি লুঠ করা হয়েছে নগদ টাকা। অনেক জায়গাতেই ট্রেন, স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ট্রেনে পাথরও মারা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ, মালদহ, হাওড়ার একাধিক জায়গায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, শুধুমাত্র তাদেরই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা। পূর্ব রেলের প্রায় পনোরটি স্টেশনে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। নষ্ট হয়েছে ৬২টি কোচ। আগুনে পোড়ানো হয়েছে কয়েকটি ট্রেন। বেশ কয়েকটি ট্রেনে পাথর ছুড়েও ভাঙচুর করা হয়। নষ্ট হয়েছে ৬২টি কোচ। দক্ষিণ পূর্ব রেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আপাতত ১৫ কোটি ৭৭ লক্ষ ৩৩ হাজার ৭৭৯ টাকা বলে জানা গিয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর শাখায় ছ' টি স্টেশন তছনছ করে দেন বিক্ষোভকারীরা। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ব বলে নিশ্চিত রেল কর্তারা। নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করতে আরও আট কোম্পানি আরপিএফ রাজ্যে আসছে।