ভেস্তে যাওয়া পিকনিকই বদলে দিল ভাগ্য, ৫০ লক্ষ জিতলেন বর্ধমানের রিকশাচালক

  • লটারিতে ভাগ্য বদল গুসকরার রিকশাচালকের
  • ৫০ লক্ষ টাকা জিতলেন গৌর দাস
  • রিকশা চালককে দেখতে উপচে পড়া ভিড়

debamoy ghosh | Published : Oct 2, 2019 3:29 AM IST

পত্রলেখা বসু চন্দ্র, পূর্ব বর্ধমান: রিকশাচালকদের একসঙ্গে পিকনিকের কথা ছিল। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টির জন্য ভেস্তে যায় একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার পরিকল্পনা। ফিস্টের জন্য রাখা টাকা দিয়েই লটারির টিকিট কেটেছিলেন পেশায় রিকশাচালক গুসকরার গৌর দাস। তখনও তিনি জানতেন না ভেস্তে যাওয়া ফিস্টই তাঁর জীবন বদলে দেবে। 

পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার মুচিপাড়ার বাসিন্দা গৌরবাবু রবিবার তিরিশ টাকা দিয়ে লটারির টিকিট কেটেছিলেন। সেই টিকিটেই একবারে প্রথম পুরস্কার জিতে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা পেয়েছেন তিনি। ছাপোষা রিকশাচালককে দেখতেই এখন ভিড় উপচে পড়ছে তাঁর এক চিলতে ঘরে। 

রবিবার দুপুরেই লটারি জেতার সুখবর পান গৌরবাবু। ইতিমধ্যেই লটারির টিকিটটি গুসকরার একটি ব্যাঙ্কে জমা করেছেন তিনি। 

পেশায় রিকশাচালক গৌরবাবুর বাড়িতে বিধবা মা, স্ত্রী, দুই মেয়ে ও ছেলে রয়েছে। সংসার টানতে দিম মজুরের কাজ করেন তাঁর স্ত্রী এবং মা। রিকশা চালিয়ে উপার্জন করা টাকা থেকে মাঝে মধ্যেই ভাগ্য বদলের আশায় লটারির টিকিট কাটতেন গৌরবাবু। কিন্তু কখনও একশো, দেড়শো টাকার বেশি প্রাপ্তি হয়নি। তাই লটারির টিকিট কাটার নেশাও অনেকটা কমে গিয়েছিল। 

গৌরবাবু জানিয়েছেন, গত রবিবার রিকশাচালকরা মিলে একসঙ্গে খাওয়দাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু একটানা বৃষ্টিতে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়। ফিস্টে যে টাকা দেওয়ার কথা ছিল, তা বেঁচে যায়। তখনই একরকম জোর করে তাঁকে ওই লটারির টিকিটটি বিক্রি করেন ওই পরিচিত। কিছু পাবেন না ধরে নিয়েই টিকিট কেটেছিলেন গৌরবাবু। এখনও ঘোরের মধ্যে থাকা ওই রিকশাচালকের কথায়, 'কোনওদিনই বড় পুরস্কার জিতিনি। আমার কাছে তখন মাত্র সত্তর টাকা ছিল। তাই আর পয়সা নষ্ট করেই টিকিট নিতে চাইছিলাম না। কিন্তু লটারি বিক্রেতা খুব জোরাজুরি করাতেই টিকিট নিলাম। আমি তো ভাবতাম আমাদের কোনওদিনই টাকাপয়সা হবে না। তাই হতাশ হয়ে পড়েছিলাম।'

সেই হতাশা এখন বাঁধভাঙা আনন্দে বদলে গিয়েছে। কিন্তু একসঙ্গে এতগুলো টাকা জেতায় চিন্তিতও হয়ে পড়েছেন ওই রিকশাচালক। তাঁর বন্ধু, প্রতিবেশী এবং আত্মীয়রা অবশ্য গৌরবাবুকে সাহস জুগিয়েছেন। লটারিতে পাওয়া টাকায় কী করবেন? গৌরবাবু বলেন, 'একটা বাড়ি করার ইচ্ছে আছে। পারলে দু' এক বিঘে জমি কিনে চাষবাষ করব। আর ছেলেমেয়েগুলোকে ভাল করে মানুষ করব।'

আরও একটা ইচ্ছে অবশ্য আছে গৌরবাবুর। ভেস্তে যাওয়া ফিস্টটা এবার নিজের টাকাতে করেই স্ট্যান্ডের সব রিকশাচালকদের ভালমন্দ খাওয়াবেন তিনি!
 

Share this article
click me!