মানুষের ভোটে জিতে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতার দম্ভে তিনি যে মানবিকতা হারিয়ে ফেলেননি, তারই প্রমাণ দিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু। রাস্তা থেকে তুলে এক অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে নিয়ে গেলেন তিনি। খোদ জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতির দাবি, বাড়ির লোক সঙ্গে না থাকায় প্রথমে ওই ব্যক্তিকে ভর্তি নিয়ে চায়নি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেষপর্যন্ত তিনি নিজে বন্ডে সই করে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকালে। দুই কর্মাধ্যক্ষকে নিয়ে গাড়ি চেপে এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু। যাওয়ার পথে তাঁর নজরে পড়ে, বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেটের কাছের রাস্তা ধারে পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, তিনি অসুস্থ। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়েন জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি। স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সাহায্যে ওই ব্যক্তিকে গাড়িতে তুলে সটান হাজির হন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। দেবু টুডুর বক্তব্য, 'জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলেও বাড়ির লোক না এলে চিকিৎসা করা যাবে না বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। কিন্তু এটা কেন হবে? আগে রোগীর চিকিৎসা হোক, তারপর তো ফর্মালিটি। কিন্তু আমি নিজের পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও রোগীকে ভর্তি নিতে চাইছিলেন চিকিৎসকরা। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। বন্ডে সই করে ভর্তি করিয়েছি।'
কিন্তু যাঁকে রাস্তা তুলে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি, তাঁর পরিচয় কী? কেনই বা তিনি রাস্তায় পড়েছিলেন? জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম অমর ক্ষেত্রপাল। বর্ধমানের গলসি থানার বড়দিঘি এলাকায় তাঁর বাড়ি। তবে বাড়িতে থাকেন না অমর, তিনি ভবঘুরে। দিনভর বর্ধমানে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান। শুক্রবার সকালে অসুস্থ হয়ে বর্ধমান শহরের কার্জন গেটের কাছে রাস্তায় পড়েছিলেন তিনি।