হতভাগ্য পাঁচ শ্রমিককে তো আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তবে কাশ্মীরের মৃত মুর্শিদাবাদের পাঁচ শ্রমিকের পরিবারের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুর সাগরদিঘির বাহালগ্রামে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের হাতে পাঁচ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মুর্শিদাবাদ জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র-সহ জেলার তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরাও।
পেটের দায়ে কাশ্মীরে কাজ করতে গিয়ে জঙ্গি হামলার প্রাণ গিয়েছে মুর্শিদাবাদে পাঁচ হতভাগ্য শ্রমিকের। বলা ভালো, তাঁদের নৃশংসভাবে খুন করেছে জঙ্গিরা। কোনওমতে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন একজন। শ্রীনগরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শ্রমিক। আহত ও নিহত, সকলেরই বাড়ি সাগরদিঘি বাহালগ্রামে। বুধবার গভীর রাতে মৃত পাঁচ শ্রমিকদের দেহ পৌঁছয় কলকাতা বিমানবন্দরে। রাতেই সড়কপথে দেহগুলি নিয়ে মুর্শিদাবাদে সাগরদিঘির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কফিনবন্দী হয়ে যখন নিজেদের গ্রামে পৌঁছান কামরুদ্দিন, মুরসেলিমরা, তখন সবেমাত্র ভোরের আলো ফুটেছে। প্রিয়জনদের নিথর দেহের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকেরা। বাহালগ্রামে নিহতদের শেষশ্রদ্ধা জানান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ আবু তাহের-সহ অন্যন্য। এরপরই গ্রামে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
বেলার দিকে সাগরদিঘি বাহালগ্রামে গিয়ে পরিবারের হাতে সরকারের তরফে ৫ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্যে চেক তুলে দেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। নিহতদের পরিবারের অন্তত একজনের চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কুলগ্রামের ঘটনায় কেন্দ্র সরকারকে তুলোধোনা করেছেন পরিবহণ মন্ত্রী। তিনি বলেন, 'কাশ্মীর এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। সেখানে কোনও রাজ্য় সরকার নেই। কুলগ্রামে নারকীয় হত্যাকাণ্ডে দায় মোদির সরকারের। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।'
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বাহালগ্রাম থেকে কাশ্মীরের শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন ৬ জন। সোমবার কুলগামে তাঁদের নিশানা করে জঙ্গিরা। জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে তাঁদের উপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। মারা গিয়েছেন ৫ জন, বরাতজোরে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন একজন। গুরুতর আহত অবস্থা তাঁর চিকিৎসা চলছে শ্রীনগরের হাসপাতালে।