টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠার পরই গা ঢাকা দিয়েছিল অভিযুক্তরা। এরপর শুক্রবার রাতে রায়দিঘিতে তল্লাশি চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। আপ্ত সহায়কের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না বলেই দাবি করেন তেহট্টের বিধায়ক।
গ্রেফতার করা হল নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার আপ্তসহায়ক-সহ তিনজনকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি থেকে তেহট্টের তৃণমূল বিধায়কের আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়াল এবং তাঁর দুই সঙ্গী শ্যামল কয়াল এবং সুনীল মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতিদমন শাখা। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে অনেকের থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছিল তাপস সাহার বিরুদ্ধে। তাঁর বিধানসভা এলাকার লোকেরাই এই নিয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এরপরই এই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করল নদিয়া পুলিশ। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন বিধায়ক। পাশাপাশি আপ্তসহায়কের সঙ্গেও কোনও সম্পর্ক ছিল না বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠার পরই গা ঢাকা দিয়েছিল অভিযুক্তরা। এরপর শুক্রবার রাতে রায়দিঘিতে তল্লাশি চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও আপ্তসহায়কের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না বলেই দাবি করেন তেহট্টের বিধায়ক। অবশ্য ২০১৬ সাল থেকে বিধায়কের আপ্ত সহায়ক হিসেবে নিযুক্ত ছিল বছর চল্লিশের প্রবীর। তেহট্টের খাসপুর বয়ারবাদা এলাকার বাসিন্দা-সহ তিনজনই অভিযোগ ওঠার পর গা-ঢাকা দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে তিনটি এলাকা থেকে চিঠি গিয়েছিল অভিষেকের কাছে। তার মধ্যে একটি চিঠি গিয়েছিল তেহট্ট থেকেও। আরও একটি চিঠি গিয়েছে তাঁর আগের বিধানসভা ক্ষেত্র পলাশিপাড়া থেকে। তৃতীয় চিঠিটি যায় করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে।
অভিযোগ, তাপস সাহা ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পলাশিপাড়ার বিধায়ক থাকাকালীন অনেকের কাছ থেকে বিভিন্ন দফতরে চাকরি দেওয়া ও রেশন ডিলারশিপ দেওয়ার নাম করে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অভিযোগকারীদের দাবি, একাধিকবার টাকা ফেরত চাইলেও উনি দেননি। কয়েকদিন আগে প্রতারিতরা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে লিখিত অভিযোগ জানান। এমনকী, টাকা ফেরত না পেলে আত্মহত্যা করার হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে তাপস সাহার সঙ্গে একাধিক অভিযোগকারীর কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিংও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকী, আর্থিক লেনদেনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন- 'কংগ্রেসকে ব্ল্যাকমেল করতেই তৃণমূলকে ব্যবহার', দল ছেড়ে PK-কে কাঠগড়ায় তুললেন গোয়ার নেতা
মোট তিন জায়গা থেকে সব মিলিয়ে তাপস সাহা ১৬ কোটি টাকা তোলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে চিঠিগুলিতে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ খারিজ করেছেন বিধায়ক তাপস সাহা। শুধু তাই নয়, তাঁর চ্যালেঞ্জ, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন।