সংক্ষিপ্ত
কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শনিবারই অর্জুনকে দিল্লিতে তলব করেছে। বিজেপি সূত্রে খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শনিবার রাতেই পীযূষ ও অর্জুনকে মুখোমুখি বসার নির্দেশ দিয়েছে।
কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের পাটশিল্প নিয়ে 'বেসুরো' মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে। এনিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পীযূষ গোয়েলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। এমনকী, এই শিল্পকে বাঁচানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশেও চেয়েছেন। এর জন্য কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীকে আগেই চিঠি লিখেছিলেন। আর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন অর্জুন। পাটের দাম বেঁধে দেওয়ার ইস্যুতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও চাইলেন তিনি।
বাংলা, বিহার, ওড়িশা ও অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে পাটশিল্প নিয়ে চিঠি দিয়েছেন অর্জুন সিং। এর আগে পাটের দাম নিয়ে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কার্যত সাত দিন সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। মমতাকে চিঠিতে বিজেপি সাংসদ লেখেন, "পাটের দাম বেঁধে দেওয়ার কেন্দ্রীয় জুট কমিশনারের সিদ্ধান্তের জেরে আমাদের রাজ্যের পাটচাষি, জুটমিলের কর্মী এবং পাটশিল্পকে যে কতটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে, তা আপনি অবশ্যই জানবেন। বাধ্য হয়ে কেন্দ্রের জুট কমিশনারের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছি। আমি অনুরোধ করছি, দয়া করে আপনি কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিতে হস্তক্ষেপ করুন।"
এই চিঠি প্রসঙ্গে অর্জুন বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যবস্থা নেবেন কিনা সেটা তাঁর বিষয়। আমি একটা লড়াই শুরু করেছি। রোজ রোজ এসে শ্রমিকরা বলছে, আমার চাকরি থাকবে তো? ২০ হাজার শ্রমিক কাজ হারিয়েছে। সব মিলিয়ে বেকার ২ লক্ষ ৪০ হাজার। আমি এদের ভোটে জিতেছি। এদের জন্য কিছু না করলে, আমাকে ভোট দেবে না।" এদিকে এভাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অর্জুনকে সরাসরি সরব হতে দেখে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। একাংশের মতে, তাহলে কি এবার ঘরওয়াপসি হতে চলেছে অর্জুনের? আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি বেড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন- 'কংগ্রেসকে ব্ল্যাকমেল করতেই তৃণমূলকে ব্যবহার', দল ছেড়ে PK-কে কাঠগড়ায় তুললেন গোয়ার নেতা
ব্যারাকপুরের এই সাংসদকে সামসাতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। আর তা সামাল দিতে গিয়েই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শনিবারই অর্জুনকে দিল্লিতে তলব করেছে। বিজেপি সূত্রে খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শনিবার রাতেই পীযূষ ও অর্জুনকে মুখোমুখি বসার নির্দেশ দিয়েছে। সেই মতো দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন অর্জুন। জানা গিয়েছে, আজ রাতেই পীযূষের বাড়িতে বৈঠক হবে।
এ প্রসঙ্গে অর্জুন বলেন, "রাজ্যের পাটশিল্প রক্ষা করাটা আমাদের কাছে মরণ-বাঁচন বিষয়। রাজ্যের বড় পরিচয় পাটশিল্প। সেই শিল্পই যদি না থাকে এবং তার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যদি দায়ি হয়, তবে মানুষ কেন আমাদের সঙ্গে থাকবে?" এদিকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এভাবে সরব হওয়ায় তাঁর দলবদলের জল্পনা আরও বাড়তে শুরু করেছে। যদিও এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, "দল ছাড়ার কথা প্রথমেই কেন আসছে? অনেকভাবে আন্দোল করা যায়। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা যায়, অনশন করা যায়। আমি আমার এলাকার মানুষের সমস্যার কথা বলেছি। আমার রাজ্যের সমস্যা নিয়ে কথা বলছি।"
এদিকে অর্জুনকে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন। তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সবাই ভালোবাসে। ভুল বুঝতে পেরে অনেকেই ফিরে এসেছেন। অর্জুনদাও একসময় আমাদের সঙ্গে দল করতেন। উনি এলে ওয়েলকাম।" অবশ্য দলবদলের জল্পনা অর্জুন সিং নিজে উড়িয়ে দিলেও তাঁর এই চিঠিকে কেন্দ্র করে চড়ছে রাজ্য রাজনীতির পারদ।