রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের ঘর থেকে উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। জেলে যেতে হচ্ছে মন্ত্রীদের। তখন একদম ভিন্ন ছবি মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে। বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেনের সহজ সরল জীবন যাপন মন জিতে নিয়েছে সাধারণ মানুষের।
এসি লাগানো কাঁচে ঢাকা ঠান্ডা ঘর নয়। স্থানীয় এক চায়ের দোকানের এক চিলতে টিনের নিচে চলছে মন্ত্রীর কার্যালয়। সেখান থেকেই মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার কাজ করে চলেছেন মন্ত্রী। এক দিকে রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের ঘর থেকে উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। জেলে যেতে হচ্ছে মন্ত্রীদের। তখন একদম ভিন্ন ছবি মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে। বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেনের সহজ সরল জীবন যাপন মন জিতে নিয়েছে সাধারণ মানুষের।
রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই চায়ের দোকানে বসে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশেতেন তিনি। মন্ত্রী হয়ে যাওয়ার পরেও পাল্টাননি সেই অভ্যাস। এলাকার চায়ের দোকানে বসেই কথাবার্তা সেরে নিচ্ছেন মানুষজনের সঙ্গে। শুনছেন তাদের অভাব অভিযোগ। পাড়ার চায়ের দোকানই যেন মন্ত্রীর কার্যালয়। আসলে পাড়ার চায়ের দোকান গুলোয় তো বাঙালির আড্ডার জায়গা। তাই চায়ের দোকানের মতন জনসংযোগ আর অন্য জায়গায় হবে না। পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ তাজমুল হোসেন তাই মন্ত্রী হয়ে গেলেও চায়ের দোকান ছাড়েন নি। তেমনই জানিয়েছেন দলীয় কর্মী সমর্থকরা। এলাকার মানুষও খুব খুশি মন্ত্রীর ব্যবহারে। কারণ সমগ্র সমাজে একটা কথা প্রচলিত আছে নেতারা ভোটে জিতে গেলে আর মানুষের সঙ্গে সংযোগ রাখেন না। সেটা বাস্তবে অনেকটা সত্যি। কালো কাঁচে ঢাকা এসি গাড়িতে ঘুরে মন্ত্রী নেতারা। এসি ঘরেই বসে কাজ সারে। তাই সাধারণ মানুষদের ধরা ছোঁয়ার অনেকটা বাইরে চলে যান তারা। কিন্তু তাদের এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী একদম অন্যরকম। তাদের সমস্ত দরকারে তারা পাশে পেয়ে যায় মন্ত্রীকে। তাই স্বাভাবিক ভাবে তারা খুশি।
এদিকে মন্ত্রী জানিয়েছেন তিনি নেত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে থাকার জন্য চায়ের দোকানে বসেন। যদিও এটা ওনার আজকের অভ্যাস নয় রাজনীতি জীবনের শুরু থেকেই তিনি চায়ের দোকানে বসেন। দীর্ঘদিন বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাজমুল হোসেন। রাজ্যের এক সময়ের মন্ত্রী বিশু মৈত্রের হাত ধরে রাজনীতিতে তাজমুলের হাতে খড়ি। বাম আমলেও বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে পালা বদলের পর তৃণমূলে যোগ দেন। কিছুদিন আগে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী হন।
হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেন, 'চায়ের দোকানে বসেই আমি মানুষের অভাব অভিযোগ শুনি আর তা সমাধানের চেষ্টা করি। এটা নতুন কিছু নয় আমি বরাবর চায়ের দোকানে বসে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। আর আমাদের নেত্রীরও তাই নির্দেশ রয়েছে।'
চায়ের দোকানের মালিক লাল মোহাম্মদ বলেন, উনি রাজনীতি জীবনের প্রথম থেকেই চায়ের দোকানে বসেন আমরা দেখি। উনি খুব সাধারণভাবে জীবন-যাপন করেন। মন্ত্রী হওয়ার পরেও সেটার কোন বদল হয়নি।
জন-প্রতিনিধিদের কাজ হল জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। সেই কারণেই জনগণ তাদের নির্বাচিত করেন। কিন্তু বর্তমান রাজনীতিতে দেখা যায় এর উল্টো ঘটনা। যদিও তাজমুল হোসেনের মত কিছু ব্যতিক্রমী চিত্রও আছে। যাদের দেখে সাধারণ মানুষের আবার রাজনীতির উপর বিশ্বাস ফিরে আসে।