উত্তম দত্ত, হুগলি: সুদূর হালিশহর থেকে গঙ্গায় ভাসতে ভাসতে চন্দননগর। না কোনও মৃতদেহ নয় জীবন্ত মানুষ। আত্মহত্যা করতে চেয়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়া যাত্রীর প্রাণ এভাবেই বাঁচিয়ে দিল কচুরিপানা! তার উপর ওই ছাত্রী সাঁতারও জানত না।
এ দিন সকালে চন্দননগরে গঙ্গা থেকে এক ছাত্রীকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধারের পরে এমনই তথ্য সামনে এসেছে। হাসপাতালে চিকিৎসার পরে ওই ছাত্রী আপাতত সুস্থই আছে। তাকে তার পরিবারের হাতে তুলেও দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, উত্তর চব্বিশ পরগণার হালিশহরের বাসিন্দা একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী রবিবার রাতে পড়াশোনা না করা নিয়ে মায়ের কাছে বকা খেয়েছিল। একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর তাতেই প্রচণ্ড অভিমান হয় । তার পরেই নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে।
যেমন ভাবা তেমন কাজ। বাড়ির কাছেই গঙ্গা থাকায় তাতে ঝাঁপ দিয়েই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্রী। ভোররাতে সকলের অগোচরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। কিন্তু রাখে হরি মারে কে! গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়ার পরেই ওই ছাত্রীর দেহ আটকে যায় কচুরিপানার ঝাঁকে । ফলে, ডুবে না গিয়ে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় জলেই ভাসতে থাকে ওই ছাত্রী। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে জলে অচৈতন্য অবস্থায় থাকার পর চন্দননগর আর জগদ্দলের মাঝামাঝি ওই ছাত্রীকে ভাসতে দেখেন একটি মাছ ধরার নৌকোর মাঝি।
প্রথমে অবশ্য ওই মাঝি ভেবেছিলেন, কচুরিপানার সঙ্গে কোনও মৃতদেহ ভাসছে। ওই মাঝিই অন্যান্য মাঝিদের খবর দেন। এর পর একটি লঞ্চ থেকে দড়ি ছুড়ে কচুরিপানা সমেত ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। চন্দননগরের রানিঘাট ঘাটে মেয়েটিকে তোলা হলে বোঝা যায় যে ওই কিশোরী বেঁচে আছে। এর পরেই তাঁকে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসার পরে কিছুক্ষণের মধ্যে ওই ছাত্রীর সংজ্ঞা ফেরে। এর পরে সে নিজেই বাড়ির ঠিকানা এবং অভিভাবকদের মোবাইল নম্বর দেয়। হাসপাতালের তরফে খবর দেওয়া হয় কিশোরীর পরিবারকে। এর পর তাঁর মা এবং অন্যান্য আত্মীয়রা এসে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।