কখনোও ঘরের মধ্যে আচমকা অচেনা লোকের অট্টহাসি, কখনো বা ছায়া মানুষ হেঁটে চলেছে ঘরের মধ্যে দিয়ে, আবার কখনো বা দরজা-জানলা মাঝরাত্রে টোকা দিচ্ছে কেউ। অথচ কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। সদর শহর বহরমপুরের প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত অন্যতম এলাকা কান্তনগরে এমন ঘটনাই ঘটে চলেছে। যার জেরে এমনকি স্থানীয় এক বাড়ির কর্তা তার নবনির্মিত বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য পর্যন্ত হয়েছেন। যাবতীয় ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরজুড়ে ভুতের অজানা ভয়ে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন, 'গানই আমার অক্সিজেন', SSKM থেকে ছাড়া পেতেই ফের অসুস্থ মদন মিত্র
যদিও স্থানীয় একাংশের দাবি এই ঘটনার পেছনে কোন দুষ্কৃতী চক্র তাদের অসৎ উদ্দেশ্য সফল করতেই এই পরিকল্পনা করছে। টানা কয়েকদিন ধরেই এমনটাই চলছে। বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া ওই পরিবারের সদস্যরা প্রতিবেশীদের জানিয়েছেন, একটি নয়, তিনটি ভূত রয়েছে। তাদের তাড়াতে কয়েকদিন আগে তান্ত্রিক ডেকে এনে যজ্ঞ করা হয়েছিল। তাতে একটি ভূত তাড়ানো গেলেও বাকি দু’টিকে তাড়ানো যায়নি। তারা তাণ্ডব চালাচ্ছে। ওই পরিবারের কথা শুনে এলাকার লোকজনও কিছুটা আতঙ্কে ভুগছেন। তাঁদের অনেকেই বলছেন, আগে গভীর রাতে ওই পথ দিয়ে চলাফেরা করলেও ভয় লাগেনি। কিন্তু এখন গা ছমছম করছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও কিছু দেখা যায়নি। অনেকে আবার সেসব তোয়াক্কা করছেন না। তাঁদের দাবি, এই পরিবারটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেউ ভয় দেখাতে পারে। একই মত বিজ্ঞান মঞ্চেরও। তাঁরাও বলছেন, ভূত বলে কিছু নেই। এসবের পেছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে।
আরও পড়ুন, কেন্দ্রের তলব সত্ত্বেও সোমবার সম্ভবত দিল্লি যাচ্ছেন না আলাপন, থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে
মুর্শিদাবাদ জেলার বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, অনেক সময়ই অন্ধ বিশ্বাসের জেরে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আবার কখনও কখনও কেউ নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব করে থাকতে পারে। পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পরিবারটি কয়েকদিন আগেই কান্তনগরের নতুনপাড়ায় বাড়িটি কিনেছিল। প্রথম থেকে কয়েকদিন পরিবারের লোকজন ভালোই ছিলেন। পরে প্রতিবেশীদের জানানো হয়, বাড়িতে ভূত রয়েছে। মাঝ রাতে তিন ভূতকে দেখে অনেক সময় বাড়ির লোকজনও অনিচ্ছাকৃতভাবেই হেসে উঠছেন। বিশেষ করে বাড়ির গৃহিণী বেশি হাসছেন। মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে জানালার ধারে গিয়ে তিনি হেসেই চলছেন।
আরও পড়ুন, আজই বুকের এক্স-রে হবে বুদ্ধদেবের, 'শুকনো কাশি' হওয়ার চিন্তায় চিকিৎসকেরা
এলাকার বাসিন্দা তন্ময় দাস বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে কান্তনগরে রয়েছি। কোনওদিনই অস্বাভাবিক কিছু দেখিনি। ওই বাড়িটি যেখানে তৈরি হয়েছে কিছুদিন আগেও সেখানে ফাঁকা জমি ছিল। সম্প্রতি কয়েকটি বাড়ি ওই এলাকায় তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই ঘটনার পিছনে দুষ্কৃতীদের হাত থাকতে পারে। হয়তো বাড়িটি দখল করাই তাদের উদ্দেশ্য। তাদের খুঁজে বের করা দরকার। তা না হলে অন্য পরিবারগুলিও একই সমস্যায় পড়বে"। এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বাইরে থেকে দরজায় তালা দেওয়া রয়েছে। বাইরে থেকে যজ্ঞ করার কিছু সামগ্রী দেখা যাচ্ছে। ভূত থাকার খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা মাঝেমধ্যেই সেখানে জটলা করছেন। কেউ কেউ ভূতের কাহিনী বিশ্বাস করছেন,