শাখারভ সরকারকে জেলা সভাপতি ঘোষণা করা হল রাজ্য নেতৃত্বে তরফে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন রাজ্য নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তে আগামী দিনেও দু’পক্ষের মধ্যে ঠান্ডা দ্বৈরথ চলতে থাকবে।
রাজ্য বিজেপির (State BJP) অন্দরে ঘটে চলা একের পর এক রদবদলের (reshuffle) প্রভাব এবার এসে পড়ল মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) গেরুয়া শিবিরে (BJP Camp)! যা প্রকাশ পেতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে ওয়াকিবহাল মহলে। বিশেষ সূত্র মারফত জানা যায় পৌর নির্বাচনের আগে মুর্শিদাবাদের পদ্ম শিবিরে বড়সড় রদবদল ঘটালো রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এতদিন মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি ছিলেন বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ। তাঁর বিরোধী শিবিরের নেতা হিসেবে পরিচিত শাখারভ সরকার। বরাবরই উভয়ের মধ্যে অম্ল মধুর সম্পর্ক রয়েছে বলেই রাজনৈতিক মহলের মতামত।
এবার সেই শাখারভ সরকারকে জেলা সভাপতি ঘোষণা করা হল রাজ্য নেতৃত্বে তরফে। আর এই ঘটনায় নতুন মাত্রা পেয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন রাজ্য নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তে আগামী দিনেও দু’পক্ষের মধ্যে ঠান্ডা দ্বৈরথ চলতে থাকবে চরমে। যার ডিভিডেন্ট ঘরে তুলবে বিরোধী শাসক শিবির। এদিকে দলীয় কর্মীদের একাংশের দাবি, রাজ্য নেতৃত্বের উচিত ছিল সব দিক বিচার করে এমন কাউকে মুর্শিদাবাদের মত জেলার সভাপতির পদে বসানো যা কে নিয়ে কোনভাবেই দলের অন্দরে বিতর্ক থাকবে না।
কিন্তু তা হয়নি। এখানেই শেষ নয়, পাশাপাশি জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতিও বদল করা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। সুজিত দাস এই সংগঠনিক জেলার সভাপতি ছিলেন। তাঁর পরিবর্তে ধনঞ্জয় ঘোষকে সভাপতি করা হয়েছে। ধনঞ্জয়বাবু বহুদিন ধরেই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনে লড়াই করে তিনি জয়ী হয়েছেন। তাই তাঁকে পদে বসানো নিয়ে তেমন বিতর্ক তৈরি হয়নি।
বিদায়ী সভাপতি সুজিত দাস বলেন, রাজ্য নেতৃত্ব যোগ্য লোককে বেছে নিয়েছে। সংগঠনের ভালোই হবে। দলের উন্নতি হবে আগামী দিনে"। মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার নবনির্বাচিত সভাপতি শাখারভবাবু বহুদিন ধরে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যুক্ত। দলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে গোষ্ঠী রাজনীতিতে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলে আসছেন। তাই তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা আগামী দিনে কতটা সক্রিয় থাকবেন তা নিয়ে দলের কর্মীরা ধন্দে রয়েছেন।
বিদায়ী জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ তথা বিধায়ক অবশ্য বিচক্ষণ রাজনীতিবিদের মত জবাব দিয়ে বলছেন, বিজেপি একটি রেজিমেন্টে পার্টি, তাই দলের নিয়মনিষ্ঠা মেনেই পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। এসব নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব,অন্তর্দ্বন্দ্বের কোন সম্পর্ক নেই। শাসক দল কোনভাবেই বিজেপির ঘর ভাঙতে পারবে না আগামী দিনে মুর্শিদাবাদ জেলায়"।
পাল্টা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বিজেপির মধ্যে চাপা দ্বন্দ্ব এই ঘটনায় জোরালোভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। যা আগামী দিনে মুর্শিদাবাদের রাজনীতিতে ঘাসফুল শিবিরকে আরও বেশি শক্তিশালী করবে পুরভোটে নিশ্চিত"।