দেবীর পেটে কেটে উদ্ধার জীবন্ত কিশোরী, সাড়ে তিনশো বছরের ইতিহাস বয়ে নিয়ে চলেছে এই পুজো

  • থিমপুজোর বাজারে ঐতিহ্যে পরম্পরা
  • সাড়ে তিনশো বছরেও বদল নেই পুজোর রীতিতে
  • পারিবারিক পুজো হয়ে ওঠেছে সার্বজনীন
  • এই পুজো দেখতে মানুষের ঢল নামে এলাকায়

Asianet News Bangla | Published : Oct 23, 2020 10:16 AM IST

থিম পুজোর বাজারে ছেদ পড়েনি ঐতিহ্যের পরম্পরায়। মুর্শিদাবাদে রঘুনাথপুরে শহরে 'পেটকাটি দুর্গা'-কে সাধারণ মানুষের উৎসাহের অন্ত নেই। এই পুজোর বয়স সাড়ে তিনশোর বছরের বেশি। পুজোর সময়ে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ ভিড় জমান এলাকায়।

আরও পড়ুন: ২৫০ বছরের ঐতিহ্য, এবছর নমোনমো করেই হচ্ছে মহিষাদল রাজবাড়ির পুজো

মুর্শিদবাদের জঙ্গিপুর মহকুমার অন্তর্গত ছোট শহর রঘুনাথগঞ্জ। শহরের উপকণ্ঠে আহিরণ গ্রাম। এই গ্রামেই গদাইপুর এলাকা সাড়ে তিনশো বছরের বেশি সময় ধরে পুজিতা হচ্ছেন 'পেটকাটি দুর্গা'। স্থানীয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারে হাত ধরেই দুর্গাপুজো সূচনা হয় গ্রামে। রীতিনীতি তো বটেই, প্রতিবছর প্রতিমাও তৈরি করা হয় একই মাপের। ভক্তেদের বিশ্বাস, এই 'পেটকাটি দুর্গা' অত্যন্ত জাগ্রত। কারও মনের ইচ্ছা অপূর্ণ রাখেন না তিনি।

আরও পড়ুন: ভার্চুয়ালে এবার পুরুলিয়ার দুর্গাপুজো, ফেসবুক, ইউটিউবে সরসরি দেখতে পাবেন দর্শকরা

শতাব্দী প্রাচীন এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা লোকগাথাও। শোনা যায়, দুর্গাপুজো পরিচালনার জন্য এক দরিদ্র ব্রাহ্মণকে নিয়োগ করেছিলেন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা। স্ত্রী ও কিশোরী কন্যাকে তাঁর থাকারও ব্যবস্থা করা হয় গ্রামেই। কোনও বছর সন্ধিপুজোর সময়ে ব্রাহ্মণের কিশোরী কন্যা উধাও হয়ে যায়। মেয়ে খুঁজে না পেয়ে দেবী দুর্গার সামনে হত্যে দিয়ে পড়েছিলেন ব্রাহ্মণ ও তাঁর স্ত্রী। তখন নাকি দেবী স্বপ্ন দিয়ে জানান, ফুটফুটে ওই কিশোরীকে দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। লোভ সামলাতে না পেরে গিলে ফেলেছেন তাকে! পরের দিন দেবীর পেট কেটে ওই কিশোরী জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সেই থেকে আহিরণের গদাইপুরের বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুজো 'পেটকাটি দুর্গা' নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। দুর্গামন্দিরের পিছনে রয়েছে একটি পুকুর। দুরদূরান্ত থেকে যাঁরা ঠাকুর দেখতে আসেন, তাঁদের অনেকেই ওই পুকুরে স্নান করেন।  আহিরণ গ্রামেই থাকেন নিরঞ্জন ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, 'দশমীর দিন নৌকায় চাপিয়ে নদী পার করে দেবীকে নিয়ে আসা হয় রঘুনাথগঞ্জের সদর ঘাটে। একাদশীর দিন বেলা এগারোটা নাগাদ পেটকাটি দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়া হয় জঙ্গিপুর শ্মশান ঘাটে।'

Share this article
click me!