দড়ি দিয়ে বেঁধে এক মহিলাকে রাস্তা দিয়ে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন আর এক মহিলাও। কাকুতি মিনতি করেও মিলছে না রেহাই। রাস্তা তৈরিকে কেন্দ্র করে বিবাদের গ্রামের বাসিন্দা দুই মহিলার উপরে এমনই নির্মম অত্যাচারের অভিযোগ উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধানের। নির্যাতিতা দুই মহিলা ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গঙ্গারামপুর ব্লকের নন্দনপুর এলাকায় প্রধানমন্ত্রী গ্রামী সড়ক যোজনায় চার কিলোমিটার লম্বা একটি রাস্তা তৈরি হচ্ছে। নন্দনপুর মোড় থেকে হাঁপুনিয়া মোড় পর্যন্ত রাস্তাটির জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ, প্রায় গোটা রাস্তার কাজ শেষ হয়ে এলেও গ্রামেরই বাসিন্দা এক মহিলার আপত্তিতে পাঁচশো মিটার রাস্তার কাজ প্রায় এক বছর ধরে আটকে ছিল। ওই মহিলার দাবি, রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে তাঁর জমি চলে যাচ্ছে। সেই কারণেই কাজে বাধা দেন তিনি।
এই নিয়েই শুক্রবার গ্রামবাসীদের সঙ্গে ওই মহিলার গণ্ডগোল শুরু হয়। অভিযোগ, তখনই রাস্তার কাজ শুরু করার জন্য গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা ওই মহিলাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাস্তা দিয়ে টানতে টানতে তাঁর ঘরের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই মহিলাকে বেধড়ক মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। বাধা দিতে গেলে তাঁর দিদি এবং মা- কেও মারা হয় বলে অভিযোগ।
এই অত্যাচারের ভিডিও- ই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। মারধরের জেরে আহত ওই মহিলাকে গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। আক্রান্ত মহিলার অভিযোগ, নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান অমল সরকারের নেতৃত্বেই তাঁর উপর অত্যাচার চালানো হয়। অমলবাবুই তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে হামলা চালান বলে অভিযোগ ওই মহিলার।
যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার দাবি, তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। দড়ি দিয়ে মহিলাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও ঠিক নয়। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, চব্বিশ ফুটের বদলে রাস্তা বারো ফুট চওড়া করার জন্য দাবি জানিয়েছিলেন ওই মহিলা। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করার পরেও রাস্তা তৈরি করতে গেলে ওই মহিলা বার বার বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ অমলবাবুর। তাঁর দাবি, ওই মহিলার মাত্র এক থেকে দেড় ফুট জমি রাস্তার কাজের জন্য প্রয়োজন হচ্ছিল। কিন্তু বার বার আলোচনার পরেও মহিলা জমি দিতে রাজি হচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ ওই তৃণমূল নেতার। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।