এ রাজ্যে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের গুলি করে মারার নিদান দিয়েছেন তিনি। বিজেপি-এর রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে নদিয়ার রানাঘাট থানায় এফআইআর করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, মেদিনীপুরের সাংসদের কাছে যদি আগ্নেয়াস্ত্র থাকে, তাহলে তা বাজেয়াপ্ত করারও আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
গত ররিবার নদিয়ার রানাঘাটেই নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র সমর্থনে জনসভায় বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন বিজেপি-এর রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিরোধীরা তো বটেই, গেরুয়াশিবিরের অন্দরেও সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'এখানে এককোটি অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। তারা আমার-আপনার টাকা খাচ্ছে। অন্তত পাঁচশো কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে একটিও লাঠি চলেনি, গুলিও চলেনি। দিদি-র পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। অসমে, উত্তরপ্রদেশে, কর্ণাটকে আমাদের সরকার এই শয়তানগুলিতে কুকুরের মতো গুলি করে মেরেছে, কেস দিয়েছে। এখানে খাবেদাবে আর এখনকারই সম্পত্তি নষ্ট করবে, জমিদারি পেয়েছে নাকি! লাঠিও মারব, গুলিও মারব, জেলেও ঢুকিয়ে মারব!'
আরও পড়ুন: 'হিন্দু রাষ্ট্র হবে ভারত', গঙ্গাসাগরে নাগরিকত্ব আইনকে সমর্থন পুরীর শঙ্করাচার্যের
স্রেফ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি নন, দিলীপ ঘোষ মেদিনীপুরের সাংসদও বটে। প্রকাশ্য জনসভায় তাঁর এমন মন্তব্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বস্তুত, দলের রাজ্য সভাপতির মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলেছেন আসানসোল-এর বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। দিলীপকে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' বলেছেন তিনি। এদিকে আবার 'গুলি মন্তব্য' নিয়ে দিলীপ ঘোষকে পাল্টা দিতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস-এর বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর প্রতিক্রিয়া, 'কেন্দ্রীয় সরকারের দিলীপ ঘোষকেই গুলি করে মারা উচিত।' তবে এবার পাল্টা মন্তব্য নয়, বরং দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করলেন রানাঘাট শহর তৃণমূল কংগ্রেস-এর সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দলের তরফে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে কৃষ্ণনগরে বিজেপি-এর জনসভার কারণে অ্যাম্বুল্যান্সকে ঘুরপথে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। তা নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিজেপি-এর রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয় কৃষ্ণনগরের কোতুয়ালি থানায়।