জয় শ্রীরাম বিতর্কে এবারে রাজ্যে পোস্ট অফিসগুলিতে ব্যস্ততা আর কাজের চাপ বেড়ে যেতে পারে। একদিকে যখন বিজেপি সংসদ অর্জুন সিংহ জয় শ্রীরাম লেখা দশ লক্ষ কার্ড মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পাঠানারো হুমকি দিচ্ছেন, অন্যদিকে তার পাল্টা হিসেবে তৃণমূল সমর্থকরাও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাড়ির ঠিকানায় তিনটি স্লোগান লেখা চিঠি পাঠাতে শুরু করলেন মঙ্গলবার থেকে। সবমিলিয়ে চিঠি, পাল্টা চিঠিতে জমে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতির নতুন স্লোগান বিতর্ক।
এ দিন দমদমে তৃণমূল সমর্থকরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনের উদ্দেশ্যে এই চিঠি পাঠানো শুরু করেন। দিল্লির ৭ নম্বর রেসকোর্সে পাঠানো ওই পোস্টকার্ডের উপরে জয় হিন্দ, বন্দে মাতরম এবং জয় বাংলা- এই তিনটি স্লোগান লিখে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের ঠিকানায় কয়েকশো পোস্ট কার্ড পাঠানো হয়েছে। দমদমের মতিঝিল পোস্ট অফিস থেকে এই চিঠিগুলি পাঠানো হয়। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন পোস্ট অফিস থেকে এভাবেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানো হবে। চাহিদা অনুযায়ী পোস্ট কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না বলেও দাবি করেছেন তৃণমূল নেতারা।
যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টার্গেট করে বার বার জয় শ্রীরাম স্লোগান দিচ্ছেন বিজেপি সমর্থকরা, তার পাল্টা হিসেবে এবার প্রধানমন্ত্রীর উপরে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিল তৃণমূল নেতৃত্ব, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
যে তৃণমূল সমর্থকরা এ দিন চিঠি পাঠিয়েছেন, তাঁদের দাবি, জয় শ্রীরাম স্লোগান নিয়ে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু যে কায়দায় কার্যত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি আটকে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা সেই চেষ্টার বিরোধিতা করছেন। দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, রাজ্যের বিজেপি সমর্থকরা যে ভুল করছেন, সেটা প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়ে দিতেই এভাবে চিঠি লেখার পথ বেছে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের। তাঁদের অবশ্য দাবি, বহু সাধারণ মানুষও চিঠি পাঠানোর এই কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন। তবে চিঠি পাঠানোর এই কর্মসূচিতে পরিকল্পনার ছাপ স্পষ্ট। পোস্ট কার্ডের উপরে রীতিমতো ছাপিয়ে তিনটি স্লোগান লিখে দেওয়া হয়েছে। অনেকে আবার ইংরেজি এবং বাংলাতে হাতে লিখেও প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে পোস্ট কার্ড পাঠিয়েছেন।
তৃণমূলের পাল্টা এই চাপে জয় শ্রীরাম বিতর্কে ইতি পড়ে কি না, তা সময় বলবে। জয় শ্রীরামের মোকাবিলায় জয় হিন্দ বা জয় বাংলা কতটা কার্যকর হল, সেই প্রশ্নেরও উত্তর পাওয়া যাবে।