মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে সেজেছিল ঐতিহাসিক পর্যটনকেন্দ্র, পুজোর মুখেই গেটে তালা

  • পুজোর মুখে বন্ধ মুর্শিদাবাদের মতিঝিল পর্যটন কেন্দ্র
  • বেতন না পেয়ে বিক্ষোভে চুক্তিভিক্তিক কর্মীরা
  • মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই নতুন রূপ পেয়েছিল মতিঝিল
     

debamoy ghosh | Published : Sep 21, 2019 8:03 AM IST

ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র নতুনভাবে সেজে উঠেছিল মুখ্য়মন্ত্রীর নির্দেশে। কিন্তু পুজোর আগে মুর্শিদাবাদের সেই মতিঝিল পর্যটন কেন্দ্রের বাইরে তালা ঝুলিয়ে বসেছেন শতাধিক চুক্তিভিত্তিক কর্মী। পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে এসেও ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকরা। বাধ্য হয়ে সমস্যা সমাধানে তৎপর হয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। 

হাজারদুয়ারি প্রাসাদের অদূরে অশ্বখুরাকৃতি মতিঝিলে ১৭৫০ সালে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন ঘসেটি বেগমের স্বামী নওয়াজেস মহম্মদ খাঁ। যা সাঙ্ঘি দালান নামে পরিচিত। পরবর্তীতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ওই প্রাসাদ থেকে কোম্পানি পরিচালনা করত বলে কেউ কেউ ওই এলাকাকে কোম্পানি বাগ বলেও পরিচয় দেন। 

আরও পড়ুন- ঐতিহ্যবাহী কেল্লাকে ঘিরে গড়ে উঠবে হোটেল ব্যবসা, 'ইতিহাসের ক্ষতি' বলেছে সাধারণ মানুষ

এহেন প্রাসাদটি কালের নিয়মে ধ্বংস হয়ে গেলে ,মতিঝিল পরিণত হয় ঘনঞ্জঙ্গলে। মতিঝিলকে ঘিরে অসামাজিক কাজকর্ম শুরু হয়। দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয় ওই ঐতিহাসিক নিদর্শনটি। এ কথা জানতে পেরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে মতিঝিলের সংস্কার করে নবরূপ দান করেন। নাম দেন প্রকৃতিতীর্থ। তারপর থেকে ভালই চলছিল। 

কিন্তু প্রকৃতি তীর্থের দেখভালের দায়িত্ব কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থা পাওয়ার পর থেকেই দেখা দিয়েছে নানা রকম সমস্যা। তার মধ্যে অন্যতম কর্মীদের কর্মীদের অনিয়মিত বেতন। বর্তমানে প্রকৃতি তীর্থের মালির সংখ্যা ১৪২ জন। পিএফ, ইএসআই কেটে তাঁরা হাতে পান ৬৯০০ টাকা। অভিযোগ, ওই মালিরা আড়াই মাসের বেতন পাননি। বেতন চাইতে গেলেই মালিকপক্ষের লোকজন খারাপ ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ মালিদের। এই বিষয়ে মালিরা লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনকে। কিন্তু তাতেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তাঁরা মতিঝিলে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভের পথে নামেন। মালিকপক্ষের সঙ্গে বিবাদের জেরে আহতও হয়েছেন দু' তিনজন  বিক্ষোভকারী মালি। 

লালবাগ মহকুমা আধিকারিক তোপদেন লামা বলেন, 'ওই পর্যটন কেন্দ্রের শ্রমিকরা কিছু দিন থেকে তাঁদের মজুরি পাচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। শুনলাম এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। তবে মতিঝিল বন্ধ রাখা যাবে না, দ্রুত ওই পর্যটন কেন্দ্র খোলার ব্যাবস্থা করা হবে।' 

 এই বিষয়ে বিক্ষোভকারী মালি হুজুর আলি  শেখ, ঝর্না বিবি, আসিফ শেখরা বলেন, 'মালিকপক্ষ এখানে হুমায়ূন কবির নামের একজনকে ম্যানেজার হিসেবে পাঠিয়েছেন । তার পর থেকেই শুরু হয়েছে নানা রকম দুর্নীতি । আমরা ঠিক মত বেতন পাচ্ছিনা। আমাদের বেতন দেওয়া হোক ও দুর্নীতিপরায়ণ ম্যানেজারকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক। এই দাবি মানা না হলে আমারা এই আন্দোলন থেকে সরছি না।' 

সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে,দিন দু' য়েক আগে সন্ধ্যায় কিছু শ্রমিক ম্যানেজার হুমায়ুন কবিরের কাছে মাইনে চাইতে গেলে তিনি মদ্যপ অবস্থায় তাঁর লোকজন নিয়ে শ্রমিকদের উপরে হামলা চালান। এতে আহত হন মানিক শেখ ও ইয়াদ আলি শেখ নামে দুই শ্রমিক। বর্তমানে ওই দুই শ্রমিক লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ওই ঝামেলার মাঝে পড়ে আহত হন হুমায়ুন কবিরও। তিনিও ওই একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
 

Share this article
click me!