আদিবাসী তরুণী অভিযোগ করেছেন যে মন্ত্রী হুমায়ুন কবীরে তাকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার বাসভবনে রেখেছিলেন, তাকে পরিচারিকা হিসাবে কাজ করিয়েছিলেন এবং তাকে "নিচু" জাতি বলে অপমানিত করেছেন এবং কটু কথা বলেছেন
রাজ্যের করিগরি শিক্ষামন্ত্রী মন্ত্রী তথা প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে আগেই চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল। এক আদিবাসী তরুণীকে চাকরি দেওয়ার নাম করে নিজের বাড়িতে রেখে পরিচারিকার কাজ করানোর পাশাপাশি জাত তুলে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকেই সামনে এবার আসরে নামল স্বরাজ ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ ইউনিট। সংস্থার পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানান হয়েছে হুমায়ুন কবীরকে যেন অবিলম্বে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আদিবাসী যুবতীর আনা অভিযোগগুলি অত্যন্ত গভীর ও গুরুতর প্রকৃতির এবং উদ্বেগজনক৷ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এই অভিযোগগুলির তদন্ত করতে হবে এবং শ্রী কবীর দপ্তরের মন্ত্রী থাকাকালীন এই ধরনের তদন্ত স্বাধীনভাবে করা সম্ভব নয়। স্বরাজ ইন্ডিয়া লোকায়ুক্ত বা অন্য কোনো স্বাধীন সংস্থার দ্বারা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের একটি সময়সীমাবদ্ধ পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত দাবি করছে যাতে সত্য উদঘাটিত হয় এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।
আদিবাসী তরুণী অভিযোগ করেছেন যে মন্ত্রী হুমায়ুন কবীরে তাকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার বাসভবনে রেখেছিলেন, তাকে পরিচারিকা হিসাবে কাজ করিয়েছিলেন এবং তাকে "নিচু" জাতি বলে অপমানিত করেছেন এবং কটু কথা বলেছেন, যা তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইন, ১৯৮৯-এর অধীনে একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শ্রী হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বাধীন কারিগরি শিক্ষা বিভাগে নিয়োগ এবং পরবর্তীকালে যুবতীকে চাকরি থেকে অপসারনের প্রক্রিয়াটি নিয়ে প্রশ্ন এবং সরকারী ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠে আসছে।
স্বরাজ ইন্ডিয়ার রাজ্য সম্পাদক রাম বচ্চন বলেছেন: "আমাদের দাবিগুলি যদি অবিলম্বে পূরণ না করা হয়, স্বরাজ ইন্ডিয়া জনমত ও আন্দোলন গড়ে তুলবে এবং প্রয়োজনে বিষয়টিকে আদালতে নিয়ে যাবে। আমরা একজন মন্ত্রীকে একজন তফসিলি উপজাতির ওপর অত্যাচার করে অবাধে মুক্ত হয়ে যাওয়ার সুযোগ দেবনা। এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার ব্যাপক অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে, যা দুর্নীতি ছাড়া আর কিছুই নয়। দুর্নীতির প্রশ্নে স্বরাজ ইন্ডিয়া নীরব দর্শক হয়ে থাকবে না।”
সবিতা লায়েক নামে এই আদিবাসী তরুণী স্নাতক। তাঁকে কারিগরি শিক্ষা দফতরে অস্থায়ী চারকি দেওয়ার হয়েছিল। তেমনই জানান হয়েছিল দফতর থেকে। কিন্তু অফিসে যেতে হয়নি। মন্ত্রীর বাড়িতেই তাঁকে দিয়ে পরিচারিকার কাজ করান হত। তাঁকে দফতরের নিয়োগ পত্রও দেওয়া হয়নি। কিন্তু প্রতিমাসে দফতর থেকে বেতনের টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ত। কিন্তু আচমকাই তাঁকে একদিন মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী বাড়ি থেকে বার করে দেন। পরবর্তীকালে ২০২১ সালের ১০ অগাস্ট তাঁকে চিঠি দিয়ে জানান হয় , তিনি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। যদিও দফতর থেকে জানান হয়েছে, সবিতা লায়েক মন্ত্রীর বাড়ির অফিসের ব্যক্তিগত সহায়ক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।