খড়্গপুর সদর কেন্দ্রের উপনির্বাচনে একজন নয়, দুই প্রার্থীকে দিয়ে মনোনয়ন পেশ করল বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অবশ্য দাবি, তৃণমূলকে ছক বানচাস করতেই নাকি এই কৌশল নিয়েছেন তাঁরা। দলীয় প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝাঁ ছাড়াও দলের জেলার সভাপতি সমিত দাসও প্রার্থী হিসেবে এ দিন মনোনয়ন জমা দেন।
কিন্তু একই কেন্দ্রে দুই প্রার্থী কেন? খড়্গপুর কেন্দ্র থেকে প্রেমচাঁদ ঝাঁ-কে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে জমি প্রতারণার মামলা রয়েছে। প্রার্থী হিসেবে প্রেমচাঁদের নাম ঘোষণা হতেই তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে পুলিশ। বিজেপি-র অভিযোগ, পুলিশের এই তৎপরতা তৃণমূলকে সুবিধে করে দেওয়ার জন্যই। প্রেমচাঁদ ঝাঁ অবশ্য হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তী জামিন পাওয়ায় আগামী ১৩ তারিখ পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ।
খড়্গপুর সদর কেন্দ্রে আগামী ২৫ নভেম্বর ভোটগ্রহণ। কিন্তু বিজেপি নেতাদের আশঙ্কা, কোনও কারণে ১৩ তারিখের পর প্রেমচাঁদের আইনি রক্ষাকবচ না থাকলে তাঁকে গ্রেফতার করবে পুলিশ। সেই কারণেই বিকল্প হিসেবে সমিতবাবুকে দিয়ে মনোনয়ন জমা করিয়ে রাখা হল। কোনও কারণে প্রেমচাঁদকে গ্রেফতার করা হলে তখন সমিতবাবুকেই প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দেবে বিজেপি।
বুধবার পুরো মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় শোভাযাত্রা থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত হাজির ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷ খড়্গপুর শহরের গোলবাজার রামমন্দিরে পুজো দিয়ে প্রেমচাঁদকে নিয়ে দিলীপ ঘোষ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে খড়্গপুর মহকুমা শাসকের অফিসে যান ৷ সেখানে প্রেমচাঁদের সঙ্গে বিজেপি জেলা সভাপতি সমিতবাবু দু' জনেই বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন ৷ দিলীপবাবু বলেন,'প্রেমচাঁদকে প্রার্থী করায় তৃণমূল ভয় পেয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকাতে চাইছে ৷ তাই আমরাও সবরকম সম্ভাব্য জটিলতা কাটাতে সমিত দাসকেও প্রার্থী হিসেবে দিয়েছি ৷ প্রার্থী থাকবেন যে কোনও একজনই৷' দিলীপবাবু জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী যে কোনও একজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।
বিজেপি-র এই কৌশলকে কটাক্ষ করে তৃণমূল জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, 'বিজেপি নিজেদের ঘর সামলাক,পরে না হয় লড়াই করার কথা ভাববে ৷ এখানে তৃণমূল জয়লাভ করবে এটা নিশ্চিত৷'
খড়্গপুর কেন্দ্রে অবশ্য বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটাও রয়েছে। প্রেমচাঁদকে প্রার্থী হিসেবে মেনে না নিয়ে দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী প্রদীপ পট্টনায়েককে প্রার্থী করেছে। তিনিও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ক্ষুব্ধ প্রদীপবাবু বলেন, 'দায়িত্ব নিয়ে দলকে শেষ করছেন দিলীপ ঘোষ ৷ আমরা যবে থেকে রাজনীতি করছি, তখন দিলীপ বিজেপিতেই ছিল না ৷ উনি এসেই নিজের মর্জিমাফিক কাজ শুরু করেছেন৷ কোনও একটি বিশেষ স্বার্থে দুর্নীতিবাজ প্রেমচাঁদকে প্রার্থী করেছেন দিলীপবাবু। তাই বিজেপিকে বাঁচাতে আমি ভোটে লড়ছি।'