পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের আঝাপুরে মহিলা আইনজীবী মিতালী ঘোষ খুনের ঘটনায় কিনারা করে ফেলল পুলিশ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেফতার করে তোলা হল আদালতে।
বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ধৃতদের নাম সুজিত ঘড়ুই এবং প্রশান্ত ক্ষেত্রপাল। সুজিতকে গ্রেফতার করা হয় খণ্ডঘোষ থেকে। প্রশান্ত ক্ষেত্রপাল কে গ্রেফতার করা হয় আঝাপুর থেকে। জেরায় ধুতরা জানিয়েছে, প্রশান্ত ক্ষেত্রপাল গাড়ির খালাসির কাজ করে এবং সুজিত ঘড়ুই ডাব বিক্রেতা। পুলিশ জানিয়েছে, ডাব বিক্রতোই এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারিগর। ওই মহিলা আইনজীবীর বাড়িতে সে প্রায় ডাব দিতে যেতেন। বাড়ির সমস্ত নকশা তার নখদর্পণে ছিল। চুরির উদ্দেশ্যে বাড়িতে ওই বাড়িতে যায়। সুযোগ বুঝে ঘরে ঢুকে মহিলাকে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে। এরপরই হাত-পা বেঁধে বাইরে ফেলে দেয় মহিলাকে। মহিলা মরেছে কিনা বুঝতে তার মাথায় টব দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে বাড়ির আলমারি ভেঙে জিনিসপত্র চুরি করে চম্পদ দেয় দুষ্কৃতীরা।
সম্প্রতি নিজের বাড়িতেই রহস্যজনক ভাবে খুন হয়েছিলেন বর্ধমান আদালতের এক আইনজীবী । মৃতার নাম মিতালী ঘোষ (৫৮)। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার আঝাপুর গ্রামের বাড়িতে তিনি একাই বসবাস করতেন । রবিবার সকালে দুই হাত ও দুই পা বাঁধা অবস্থায় বাড়ির উঠানে পড়ে থাকা আইনজীবীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ । মিতালীদেবীর মাথা ও মুখমণ্ডলে আঘাতের ক্ষত দেখা যায় । মৃতদেহের পাশেই পড়ে থাকে তিনটি ভাঙা টবের অংশ। মৃতদেহ উদ্ধারে গিয়ে পুলিশ কর্তারা দেখেন, আইনজীবী নিজের বাড়ির যে ঘরে থাকতেন সেই ঘরটিও লন্ডভন্ড অবস্থায় রয়েছে । চুরি করতে এসে বাধা পেয়ে দুস্কৃতীরা মহিলাকে খুন করে পালিয়েছে , নাকি খুনের পেছনে অন্য কোনও কারণ ছিল তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , আসানসোলে নিবাসী চন্দ্রশেখর সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মিতালীদেবীর । বিয়ের ছয় মাস পরে তাঁর স্বামী মারা যান। তারপর থেকে আঝাপুরে বাবার বাড়িতেই থাকতেন মিতালীদেবী । তাঁর বোন চৈতালি বিবাহিত । দুই ভাই গৌরাঙ্গ ও গৌতম কর্মসূত্রে হুগলির বালিতে থাকেন । স্থানীয় মহিলা চাঁপা ধারা আইনজীবীর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন । ওইদিন সকাল সাড়ে ৭ টা নাগাদ পরিচারিকা চাঁপা পৌঁছন মিতালিদেবীর বাড়িতে । একাধিক বার কলিং বেল টেপার পরেও তিনি মিতালিদেবীর সাড়া পাননি । বাড়ির সদর দরজাও ভিতর থেকে বন্ধ দেখেন ওই পরিচারিকা। মিতালিদেবীর সাড়া না পাওয়ার বিষয়টি পরিচারিকা পাড়ার লোকজনকে জানান । তারও ডাকাডাকি করে মিতালিদেবীর সাড়া পান না । এরপর পাড়ারই কয়েকজনই মই নিয়ে এসে মিতালিদেবীর বাড়ির রান্নাঘরের চালার উপরে ওঠেন । সেখান থেকে তারা দেখেন বাড়ির উঠানে সামনে হাত, পা বাধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে মিতালিদেবীর নিথর দেহ ।