পুরুলিয়া জেলায় ভাদু পুজোর ইতিহাস বলছে, ভাদু বা ভদ্রাবতী ছিলেন পুরুলিয়ার কাশিপুরের রাজপরিবারের কন্যা। তার অকাল মৃত্যুতে তৎকালীন শোকার্ত রাজা ভাদুর পুজো শুরু করেছিলেন।
ভাদর মাসে ভাদু পুজা..ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতে (month of Bhadra) মানভূমের (Manbhum) ভাদু পরব (Vadhu festival) । ভাদু পূজো উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নানারকম মিষ্টিতে সেজে উঠেছে মিষ্টির দোকান।
পুরুলিয়া জেলার এক অন্যতম উৎসব ভাদু পুজো । প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই মহিলারা ভাদ্র মাস জুড়ে ভাদুর পুজো করে থাকেন। আজ সংক্রান্তি অর্থাৎ ভাদ্র মাসের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার সারারাত ধরে ভাদু গানের জাগরণের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় পুরুলিয়ার ভাদুর পরব।
রাতভর ভাদুর জাগরণের পর আজ সকালে হয় ভাদুর বিসর্জন। ভাদুর পুজোর প্রসাদ হিসেবে থাকে থালা ভর্তি নানারকমের মিষ্টি। এ পুজোর প্রধান উপকরণ খাজা,গজা লং,এবং জিলিপি। এ দিন মিষ্টির দোকানে বড়ো বড়ো আকারের জিলিপি বিক্রি হয়। অনেকটা ঠিক জিলিপি প্রতিযোগিতার মত। সেই মতো সাত দিন আগে থাকতেই খাজা গজা জিলিপি তৈরিতে ব্যস্ত মিষ্টির দোকানের কারিগরেরা।
পুরুলিয়া জেলার প্রায় প্রতিটি মিষ্টির দোকানের সামনেই সাজানো রয়েছে খাজা গজা এবং জিলিপি। পুরুলিয়ার ঝালদা শহরের মিষ্টির দোকানের মালিক মানিক লাই জানান প্রতি বৎসরের মতো এবছরেও ভাদু পুজো উপলক্ষ্যে তৈরী করা হয়েছে নানা মিষ্টি। কিন্তু কোভিড ও আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে বাজার ফাঁকা। সেরকম ক্রেতা নেই।
সমগ্র ছোটনাগপুর অঞ্চল তথা পুরুলিয়া জেলায় ভাদু পুজোর ইতিহাস বলছে, ভাদু বা ভদ্রাবতী ছিলেন পুরুলিয়ার কাশিপুরের রাজপরিবারের কন্যা। তার অকাল মৃত্যুতে তৎকালীন শোকার্ত রাজা ভাদুর পুজো শুরু করেছিলেন। সেই থেকে আজও চলে আসছে ভাদুর পুজো। যা পুরুলিয়া জেলায় অন্যতম লোকসংস্কৃতির মর্যাদা পেয়েছে।
তবে লোকসংস্কৃতি গবেষকরা বলেন অন্য কথা। ভাদু হলেন শস্যের দেবী। ভালো শস্যের জন্যই ভাদুর আরাধনা হয়ে থাকে বলে প্রচলিত মত রয়েছে। তবে মতামত যাই থাকুক রাঢ় বাংলার কৃষক পরিবারগুলির কাছে ভাদু পুজো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।