বিশ্বভারতী চত্বরে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় নিরাপত্তা চেয়ে শান্তিনিকেতন থানায় আবেদন করলেন উপাচার্য।
তিন ছাত্রছাত্রীকে বহিষ্কারের পর থেকেই অশান্ত বিশ্বভারতী।
আশিস মণ্ডল, শান্তিনিকেতন- একের পর নোটিশ জারি করে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন উপাচার্য (Vice Chancellor)। এমনই অভিযোগ তুলে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা পোষ্টার ঝুলিয়ে জানিয়ে দিয়েছে বিশ্বভারতীর (Viswa Bharati) কর্মসংস্কৃতি নষ্ট করা তাদের কাজ নয়। তারা চান ফ্যাসিস্ট উপাচার্যের পদত্যাগ এবং তিন ছাত্রছাত্রীর উপর থেকে বহিষ্কারের ফতোয়া প্রত্যাহার।
এদিকে বিশ্বভারতী চত্বরে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় নিরাপত্তা চেয়ে শান্তিনিকেতন থানায় আবেদন করলেন উপাচার্য। তিন ছাত্রছাত্রীকে বহিষ্কারের পর থেকেই অশান্ত বিশ্বভারতী। ধারাবাহিক আন্দোলনের পরও কর্তৃপক্ষ নমনীয় না হওয়ায় উপাচার্যের বাড়ি পূর্বিতার গেট বন্ধ করে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন ছাত্রছাত্রীরা। মঙ্গলবার অবস্থান বিক্ষোভ চারদিনে পড়ল। এদিন ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন শান্তিনিকেতনের ব্যবসায়ীদের একাংশ।
ছাত্র আন্দোলন দীর্ঘমেয়াদী হওয়ায় বিশ্বভারতী রেজিস্টার সোমবার দুটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। তাতে বলা হয় আন্দোলনের জেরে উপাচার্য আটকে থাকায় বিভিন্ন বিভাগের ফলাফল বন্ধ থাকবে। এছাড়া সমস্ত বিভাগে অ্যাডমিশন প্রক্রিয়াও বন্ধ থাকছে। অন্যদিকে মঙ্গলবার সকালে বলাকা ও পুরবী গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় অসংখ্য কর্মী সেন্ট্রাল ভবনে ঢুকতে পারেনি।
বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের দাবি আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা তালা ঝুলিয়েছে। যদিও ছাত্রছাত্রীরা প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে জানিয়ে দিয়েছে গেটে তারা ঝোলাননি। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করতেই এসব করছে। আমরা কর্ম সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতেই আন্দোলনে নেমেছি। সেই সঙ্গে ফ্যাসিস্ট উপাচার্যের পদত্যাগ চাই।
এদিকে বেলার দিকে আন্দোলন মঞ্চে হাজির হন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য ও জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সভাপতি ঐশী ঘোষ। তারা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর বোলপুর ষ্টেশন থেকে বের হওয়া একটি প্রতিবাদ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। মিছিলে ছাত্রছাত্রী, বিশ্বভারতীর কিছু কর্মী সহ অংশগ্রহণ করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। বলাকা গেটের সামনে মিছিল শেষ করে সেখানে কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করা হয়। বিকেলের দিকে বহিষ্কৃত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন অভিনেতা বাদশা মৈত্র।
ঐশী ঘোষ বলেন, “আমরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের পাশে রয়েছি। উপাচার্যের উচিত পুত্রসম ছাত্রছাত্রীদের স্নেহের পরস দিয়ে তাদের শিক্ষার মানোন্নয়ন করা। কিন্তু তিনি তা না করে লঘুপাপে ছাত্রছাত্রীদের বহিষ্কার করছেন। ছাত্রছাত্রীদের অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। এই ফ্যাসিস্ট উপাচার্যের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলছে তাতে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, এই উপাচার্য দুর্নীতিগ্রস্থ। মেলার জমা দেওয়ার টাকা ফেরত না দিয়ে আত্মসাতের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই দুর্নীতিগ্রস্থ উপাচার্যের পদত্যাগ চাই।