উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে বন দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যে বন দফতরের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন।
আলিপুরদুয়ারে গিয়ে বন দফতরের কাজকর্ম নিয়ে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি বন দফতরের আধিকারিকদের কাঠগড়ায় তোলেন। মুখ্যমন্ত্রী যে গেস্ট হাউসে উঠেছিলেন, সেখানে দেওয়া পোস্টারের ছবি তুলে ধরে বন দফতরের আধিকারিকদের কাছ থেকে জবাব চান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'হনুমানগুলোকে থ্যাংকস। ভাগ্যিস একটা কাপড় ছিঁড়ে দিয়েছিল। তাই দেখতে পেলাম। এখানে লেখা, পাচারকারীদের ধরলে গুলি করে মারা হবে। এটা কোনও ভাষা হল! আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এটা বলো। অনেক সময় সাধারণ মানুষ, যাঁরা জানেন না, জঙ্গলের রাস্তার মধ্যে দিয়ে গেলে তাঁদের উপর অত্যাচার হয়। আলিপুরদুয়ারের ডিএফও যাঁরা আছেন, তাঁদের উদ্দেশে বলি, ভুলে যদি কেউ চলে যান, আপনারা স্ট্রং অ্যাকশন করেন। যেটা মানুষের পছন্দ নয়।' মুখ্যমন্ত্রীর ঝাঁঝালো আক্রমণের পর বন দফতরের পক্ষ থেকে সাফাই দেওয়া হয়, এই পোস্টার তাদের দেওয়া নয়। বায়ুসেনার পক্ষ থেকে এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে। সে কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। সরকারি জমিতে এমন নির্দেশনামা লেখা পোস্টার দেওয়া ঠিক নয়।
পর্যটকদের হেনস্থার অভিযোগ
বুধবার প্রশাসনিক বৈঠকে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল জানান, যে পর্যটকরা রাজাভাতখাওয়ায় যাচ্ছেন, তাঁদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে। গাড়ি নিয়ে গেলে পর্যটকদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে রাজাভাতখাওয়া এড়িয়ে যেতে পারেন পর্যটকরা। সে কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, '‘ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট নিজেদের কী ভাবে? ভগবান জানে! নিজেদের মতো প্ল্যান করে এরা। নিজেদের মতো অ্যাকশন করে। সাধারণ মানুষ তো এটা বুঝবেন না। তাঁরা তো আমাদের দোষ দেবেন। সরকারকে জানাবে তো! এটা কি জমিদারি না কি? ফরেস্ট কি সরকারের বাইরে? পর্যটকদের কোনও ফি দিতে হবে না। ক্যাবিনেট মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত হবে।' পরিবেশ সংক্রান্ত কারণে বক্সায় হোম স্টে, রিসর্ট, হোটেল তৈরির ক্ষেত্রে সমস্যা নিয়েও সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বার্তা, ‘কে বাড়িতে হোম স্টে করবে, সেটা তার সিদ্ধান্ত। এখানে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের কোনও আপত্তি থাকতে পারে না।’
কাটমানি নিয়ে কড়া বার্তা
প্রশাসনের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘২৮ লক্ষের মধ্যে ১২ লক্ষ বাড়ির টাকা ছাড়া সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। সরকারি প্রকল্পের টাকা যে-ই চাইবে, তার বিরুদ্ধে এফআইআর হবে। অ্যাকশন হবেই। অন্যদিকে মন না-দিয়ে কাজে মন দিতে হবে। একজন ভালো কর্মীকে সবাই মনে রাখে। মানুষের অভিযোগ নিয়েও যদি কোনও পদক্ষেপ না করেন, মনে করবেন না আমরা ভুলে গিয়েছি। থার্ড পার্টি দিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়।’
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন-
রাজ্যের কৃষকদের জন্য বিরাট সুবিধা দিতে চলেছে সরকার, জানুন বিস্তারিত