রাতভর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিপত্তি।
সেখানে নাচের অনুষ্ঠানের জন্য অন্য জায়গা থেকে একাধিক শিল্পী এসেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন মহিলা শিল্পীরাও। কিন্তু অভিযোগ, রাতে মহিলা শিল্পীদের স্বল্প পোশাকে নাচার জন্য জোরাজুরি শুরু করে দেন ক্লাবের সদস্যরা। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মহিলা শিল্পীদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ সামনে আসছে।
এই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই দুজন ক্লাব সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, সেই বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “মামলা রুজু করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দুজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। অন্যদিকে, বাকিদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।”
যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে ক্লাবের তরফ থেকে। ক্লাব সদস্যরা পাল্টা অভিযোগ করেছেন, “অশ্লীল নাচের দাবি করা হয়নি। নাচের জন্য নির্ধারিত সময়ের অনেকটা কম অনুষ্ঠান করার পাশাপাশি টাকাপয়সা নিয়েও বেশ সমস্যা হয়। আর এই নিয়ে ঝামেলা চলার সময় নাচের দলের হামলায় ক্লাবের এক সদস্যের পা ভেঙে গেছে।
তাঁকে ইতিমধ্যেই তমলুক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে শ্লীলতাহানি ও অশ্লীল নাচের আসরের কথা বলে চালাচ্ছেন নাচের শিল্পীরা।”
স্থানীয় সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, শুক্রবার রাতে নন্দকুমার এলাকার একটি ক্লাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এলাকার বাইরে থেকেই শিল্পী আনা হয়েছিল সেখানে। অভিযোগ উঠছে, রাতে ক্লাবের কয়েকজন সদস্য মহিলা শিল্পীদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করতে শুরু করে দেন। এক মহিলা শিল্পীর অভিযোগ, সবমিলিয়ে মোট দুঘণ্টা নাচের জন্য চুক্তি হয়েছিল আয়োজকদের সঙ্গে। কিন্তু তাদের জোর করে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল সেখানে।
এমনকি, শেষের দিকে তাদের অল্প পোশাকে অশ্লীল নাচের জন্য জোরাজুরি করতে শুরু করে দেন কয়েকজন। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় তাদের। তারপরই শিল্পীদের মারধর শুরু করে দেন ক্লাবের সদস্যরা। এমনকি, বাদ যাননি মহিলারাও। মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠছে।
ক্লাব সদস্যরা শিল্পীদের আটকে রাখেন বলেও অভিযোগ উঠছে। পরে শিল্পীরা কোনওরকমে তাদের সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই ঘটনার কথা জানান এবং তারপর সংগঠনের লোকেরা নন্দকুমার থানায় দ্রুত খবর দেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে এসে শিল্পীদের উদ্ধার করে পুলিশ।
এরপর তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে ক্লাবের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। এক মহিলা শিল্পী জানিয়েছেন, “নন্দকুমারের ঠেকুয়া বাজারের একটি ক্লাব আমাদের নাচের জন্য বুক করে। সন্ধ্যা ৭টায় আমরা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে যাই এবং টানা তিন ঘণ্টা আমরা অনুষ্ঠান করি। এর পর তাঁদের অনুরোধে আরও বেশ খানিকটা সময় আমরা নাচগান করেছিলাম। এর পরেই একাধিক ক্লাব সদস্য আমাদের অশ্লীল নাচের জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন। আমরা প্রতিবাদ করতেই গ্রিন রুমে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।