
সম্প্রতি নদিয়া জেলার পলাশীপাড়া ATM কার্ড এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সাধারণ লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠে আসছে। সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে অবশেষে এই জালিয়াতি চক্রের মূল অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরে পুলিশ। রবিবার ধৃতকে তেহট্ট আদালতে আদালতে তোলা হলে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
কী ঘটেছিলো আসলে?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, কিছুদিন ধরে পলাশীপাড়ার বার্নিয়া বাজার এলাকার একটি এটিএম কাউন্টার থেকে টাকা জালিয়াতির অভিযোগ উঠছিল। বার্নিয়া বাজারের একটি এটিএম কাউন্টারে সাধারণ মানুষ টাকা তুলতে গিয়ে এটিএম কার্ড মেশিনে দিলে স্ক্রিন কাজ করছিল না। তখন পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা এক যুবক সহায়তার নাম করে ভেতরে ঢুকে গ্রাহকের কাছ থেকে পাসওয়ার্ড জেনে নেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই যুবক টাকা তুলে দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে গ্রাহক বুঝতে পারেন, তার এটিএম কার্ডটি গোপনে পাল্টে দেওয়া হয়েছে এবং অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষাধিক টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।
এইভাবে শেষ চারজনের অ্যাকাউন্ট থেকে যথাক্রমে ৮৬ হাজার, ৪২ হাজার, ১ লক্ষ ৩০ হাজার, ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা এটিএম জালিয়াতি করা হয়েছে। বার্নিয়া বাজার ছাড়াও বেথুয়াডহরি, চাপড়া থেকেও একই অভিযোগ উঠে আসে।
পুলিশি তৎপরতা
বারবার এটিএম থেকে টাকা জালিয়াতির অভিযোগ উঠে আসায়, পলাশীপাড়া এলাকার ৫টি এটিএম সেন্টারের সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়ন করা হয় চক্রান্তকারীদের ধরার জন্য। বার্নিয়ার বাজার এলাকার ওই এটিএম কাউন্টারে সাদা পোশাকের একজন পুলিশ ঢুকে এটিএম কার্ড দিয়ে টাকা তুলতে যায়। কিন্ত টাকা না উঠতে হেলমেট পরে মাথা নিচু করে এক যুবক এগিয়ে আসে সাহায্যের জন্য।
এখানেই একেবারে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর ধৃতের নাম হাসিবুল সেখ, বাড়ি পলাশীপাড়া থানার শ্রীনাথপুরে। পুলিশি জেলায় ধৃত স্বীকার করে নেয়, সে বিশেষ কৌশলে এটিএম কার্ড এক্সচেঞ্জ করে এবং সাধারণ মানুষের সমস্যার সাহায্য করার সুযোগ নিয়ে এটিএম-এর পাসওয়ার্ড জেনে জালিয়াতি করে।
তদন্তে আরও দেখা গেছে, যে এই যুবক এটিএমের কন্ট্রাক্টচুয়াল কর্মী হিসেবে কাজ করত। পিওএস মেশিন মেরামতির কাজ করতে বিভিন্ন জায়গায়ও যেত। এমনকি জেলার এক তাবড় রাজনৈতিক নেতার ভাইয়ের পাগলাচন্ডীর পেট্রোল পাম্পের পিওএস মেশিন থেকেও টাকা তোলে সে। পুলিশ তার কাছ থেকে আলাদা আলাদা ব্যাঙ্কের বহু এটিএম কার্ড উদ্ধার করেছে। পুলিশে তদন্ত এখনো চলছেই তার আরও এক শাগরেদকে ধরার জন্য।